প্রতিদিন হাওর-বাঁত্তড়, বনাঞ্চল, খাল-বিল, নদী-নালা, পুকুর-ডোবায় নানা জাতের সাপ আমাদের চোখে পড়ে। এদের কোনটাইবা আমরা ভালো করে চিনি বা জানি। এক পলক দেখেই এড়িয়ে যাই। তবে পাবনার আতাইকুলা থানার মধুপুর গ্রামে সেলিম মিয়া কিন্তু আর ১০ জনের মতো এড়িয়ে যেতে পারেননি। সম্প্রতি তার গ্রামে একটি পুকুরে মাছ ধরার সময় তার জালে একটি সাদা রঙের সাপ আটকা পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি খবর দেন নেচার অ্যান্ড ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন কমিউনিটি ফটোগ্রাফার এহসান আলী বিশ্বাসকে। এহসান গিয়ে সাপটি উদ্ধার করে পাবনা বন বিভাগে এনে দেন। কিছুদিন পরে অবশ্য বন বিভাগ থেকে সাপটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে দেশে এটাই ছিল কোনো সাদা সাপের প্রথম দেখা। সাপ বিশেষজ্ঞরা জানান, এই সাপটি আসলে আলাদা কোনো জাত বা প্রজাতির নয়। এটি একটি নির্বিষ ‘জলঢোড়া’ সাপ। মানুষের যেমন শ্বেত রোগ হয়ে চামড়া সাদা হয়ে যায়। এ সাপটির বেলায় তাই হয়েছে। রঞ্জক পদর্থের অভাব থাকায় চামড়া সাদা হয়ে গেছে।
ইংরেজিতে বলা হয় অ্যালবিনো। অ্যালবিনোর কারণে যেকোনো প্রাণীর গায়ের রঙ সাদা হতে পারে। তবে বাংলাদেশে অ্যালবিনো অন্য প্রাণী পাওয়া গেলেও সাপের বেলায় এটাই প্রথম পাওয়া গেছে। অ্যালবিনো প্রাণীর দেখা মেলা খুব বিরল ঘটনা। আগে এই সাপটির গায়ের রঙ ছিল হলুদ আর কালো। অ্যালবিনো হওয়ার কারণে তার চামড়া সাদা হয়ে গেছে। এটি অন্য ঢোড়ার মতোই নির্বিষ সাপ। এর ইংরেজি নাম Checkererd Keelback. আর বৈজ্ঞানিক নাম Fowlea piscator.
পাবনা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমরা এর আগে আর এ ধরনের সাদা সাপ দেখিনি। এটাই প্রথম দেখলাম। সাপটি অসুস্থ ছিল, সুস্থ হওয়ার পর ছেড়ে দিয়েছি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল এইচ খান বলেন, এই সাপ আমাদের দেশে এই প্রথম পাওয়া গেছে। সাধারণত শ্বেতী হওয়াতেই এই সাপের রং সাদা হয়ে গেছে। ঢোড়া সাপ রং বদলে সাদা হয়ে যাওয়া বিরল।