বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেছেন, দেশের চিকিৎসা খাতের এখনকার সব সংকট দূর করতে সবচেয়ে বেশি জরুরি সব ধরনের সমন্বয়হীনতা দূর করা। তিনি বলেন, এ মুহূর্তে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করাটা বেশি জরুরি হয়ে পড়েছে। যে কোনোভাবে অসুস্থ রোগীকে চিকিৎসা দিতে হবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। ডা. মোস্তফা জালাল বলেন, দেশে কভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই দেখছি, এর প্রতিরোধে আমাদের কোনো প্রস্তুতিই ছিল না। প্রথম পর্যায়ে ডাক্তার-নার্সদের জন্য অতি প্রয়োজনীয় পিপিই ও মাস্কের ব্যবস্থাও করা যায়নি। পরে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি হস্তক্ষেপে সেই সমস্যা দূর হয়েছে। তিনি বলেন, এর পর সামনে এলো পিপিইর সঠিক ব্যবহার নিয়ে সমস্যা। তখন আমরা কিন্তু আমাদের ডাক্তারদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। কীভাবে পিপিই, মাস্ক, গ্লাভস ব্যবহার করতে হবে, নানা ভিডিওর মাধ্যমে ডাক্তারদের সেই বার্তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এখন ডাক্তাররা যে সেবাটা দিচ্ছেন সেটা বলা চলে মোটামুটি যথেষ্ট। তিনি বলেন, আমাদের বেসরকারি হাসপাতালগুলোর মালিকরা কিন্তু মুখে অনেক কথাই বলছেন, বাস্তবে তারা সেই কাজটা করছেন না। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, নিজেদের নিয়মিত রোগীকেও তারা সেবা দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন। এসব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সরকারি-বেসরকারি সমন্বয় ছাড়া এ সংকট দূর করা যাবে না। চিকিৎসকদের আক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা একটা জিনিস দেখেছি, কভিড হাসপাতালের চেয়ে নন-কভিড হাসপাতালে কিন্তু বেশি ডাক্তার আক্রান্ত হচ্ছেন। এর কারণ হচ্ছে, রোগীদের তথ্য গোপন করা। একজন করোনা আক্রান্ত তথ্য গোপন করে গোটা হাসপাতালটাকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারেন। তাই আমি বলব, রোগীদেরও উচিত হবে অসুস্থতার বিষয়ে সঠিক তথ্যটা দেওয়া।
সাধারণ রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতের বিষয়ে তিনি বলেন, সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হলে অধিকসংখ্যক পরীক্ষা করতে হবে। কোনো ইমারজেন্সি রোগীকে যদি দ্রুত পরীক্ষা করে ফলাফলটা দেওয়া যায়, তাহলে চিকিৎসকরাও কিন্তু নির্ভয়ে সেবাটা দিতে পারবেন। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে প্রতিটি হাসপাতালকে তিনটি জোনে ভাগ করা যায়, কভিড, নন-কভিড ও আইসোলেশন। আর বেসরকারি হাসপাতালগুলোকেও চিকিৎসাসেবা অব্যাহত রাখতে হবে। সর্বোপরি এ সংকট দূর করতে সব ধরনের সমন্বয়হীনতা দূর করে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।