সোমবার, ১৮ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

সততাই হলো কাল, ধরা পড়েনি প্রকৌশলীর খুনিরা

পরিকল্পিত হত্যার দাবি স্বজনদের

গাজীপুর প্রতিনিধি

সততাই হলো কাল, ধরা পড়েনি প্রকৌশলীর খুনিরা

প্রকৌশলী দেলোয়ার

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-৭-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. দেলোয়ার হোসেনকে (৫১) পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে নিহতের পরিবার। এ হত্যার ঘটনায় একজন প্রকৌশলী ও গাড়িচালকসহ বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। তবে তদন্তের স্বার্থে আটকদের পরিচয় জানাতে চাইছে না। এ খুনের রহস্য উদ্্ঘাটনে মাঠে কাজ করছে পুলিশ, র‌্যাব ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। নিহতের বড় ভাই নূর নবী বলেন, ‘আমার ছোট ভাই অত্যন্ত সরল জীবনযাপন করত। পেশা কিংবা অফিসের বাইরে তার ব্যক্তিগত কোনো শত্রুতা ছিল না। গ্রামের বাড়িতে বছরে দু-একবার যেত, সেখানে এক-দুই দিন থেকে আবার চলে আসত। তাই ওখানেও আমাদের কোনো শত্রু নেই। ছয় মাস আগে দেলোয়ার আমার বড় ছেলেকে বলেছিল, সে আর চাকরি করবে না। এত চাপ সহ্য হয় না। অনেক সময় তাকে মোবাইলে ফোন করে চাপ প্রয়োগ করা হতো।’ তিনি জানান, ২০১৫ সালের ৫ এপ্রিল গাজীপুর সিটি করপোরেশনে যোগদানের পর তিন মাস তাকে চেয়ারে বসতে দেওয়া হয়নি। গত বছর অক্টোবর মাসের দিকে তাকে গাজীপুর সিটি কপোরেশনের প্রধান কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা এ খুনের রহস্য উদ্্ঘাটনে কাজ করছে। আশা করছি শিগগিরই খুনিরা ধরা পড়বে। আমরা এর বিচারের অপেক্ষায় রইলাম।’

প্রকৌশলী দেলোয়ারের ভাই নূর নবী আরও বলেন, ‘দুষ্কৃতকারীদের সঙ্গে আপস না করার কারণে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দেলোয়ারকে হত্যা করা হয়েছে, এতে সন্দেহ নেই। কারণ ১১ মে বেলা ১২টার দিকে বাসা থেকে বেরিয়ে তার অফিসে যাওয়ার কথা ছিল। তাকে নিতে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গাড়ি আসার কথা ছিল। কিন্তু সকাল ৯টার দিকে অন্য একটি গাড়ি চলে আসে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাসা থেকে বেরিয়ে যায় সে। দুপুর আড়াইটার দিকে গাজীপুরের অফিস থেকে বাসায় ফোন করে দেলোয়ারের অফিসে না যাওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হয়। এরপর তার মোবাইলে একের পর এক ফোন করা হয়। কিন্তু মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর আমরা সন্ধ্যায় মিরপুর মডেল থানায় গিয়ে জিডি করি। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে দেলোয়ারের লাশ বলে শনাক্ত করা হয়।’ গতকাল গাজীপুর সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক কার্যালয়-৭-এ গেলে এ বিষয়ে কোনো কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন ভালো লোক ছিলেন। তদবির ও অন্যায় কাজ তিনি পছন্দ করতেন না। এ কারণে অনেকে তার কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে ক্ষুব্ধ ছিল। কিন্তু এ জন্য তাকে খুন করতে হবে বিষয়টি তারা মেনে নিতে পারছেন না। প্রকৌশলী দেলোয়ারের ওপর কী ধরনের, কোন প্রকল্পের এবং কাদের চাপ ছিল সে বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি ওই কর্মকর্তা। এদিকে প্রকৌশলী মো. দেলোয়ার হোসেন হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী খোদেজা বেগম বাদী হয়ে রাজধানীর তুরাগ থানায় মামলা করেছেন। মামলায় অজ্ঞাত খুনিদের আসামি করা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছেন তুরাগ থানার এসআই মো. শফিউল আলম।

সর্বশেষ খবর