শিরোনাম
শনিবার, ৪ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

মাস্ক পিপিই রপ্তানিতে নতুন সম্ভাবনা

রপ্তানি করছে দেশের ৩৩টি প্রতিষ্ঠান

জিন্নাতুন নূর

করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে দেশের গার্মেন্ট কারখানাগুলোয় বাতিল হয় একের পর এক ক্রয়াদেশ। এরই মধ্যে অর্ডার না থাকায় কাজ হারিয়েছে বহু শ্রমিক। পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর নেতারা বলছেন, করোনার কারণে পোশাক খাতের প্রায় ৩২ লাখ ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল হয়েছে। আর এ অবস্থায় কিছু পোশাক কারখানা পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুয়েপমেন্ট (পিপিই) ও ফেসিয়াল মাস্কের অর্ডার পাচ্ছে। বর্তমানে ঢাকা ও তার আশপাশে সাভার ও গাজীপুরের ৩৩টি কারখানায় তৈরি হচ্ছে এ সুরক্ষাসামগ্রী। বিশ্ববাজারে মাস্ক ও পিপিইর চাহিদা তুঙ্গে থাকায় পোশাক মালিকরাও আশা করছেন চলতি বছরে দেশে এ সুরক্ষা সামগ্রীগুলোর আরও অর্ডার আসবে। ফলে এ পণ্যগুলো নিয়ে তৈরি হয়েছে রপ্তানির নতুন সম্ভাবনা।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্যমতে, গত জুলাই থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত মোট ১১.৫৮ মিলিয়ন ডলার অর্থমূল্যের মাস্ক, গ্লাভস ও পিপিই রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ গত মাসেও এ পণ্যগুলো বিপুল পরিমাণ রপ্তানি করা হয়। পণ্যগুলো রপ্তানির সঙ্গে জড়িত ৩৩টি প্রতিষ্ঠান।

জানা যায়, মেডিকেল উপকরণ তৈরি করে ফের আশাবাদী হয়ে উঠেছে অনেক পোশাক কারখানা। বর্তমানে মেডিকেল সুরক্ষা উপকরণ উৎপাদনের কাজে জড়িত কারখানাগুলোর অর্ডার পাওয়ার সংখ্যাও ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। করোনার কারণে যেসব কারখানার অর্ডার বাতিল হয়েছিল তারা এখন এ ধরনের পণ্য তৈরি করে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়ছে বাংলাদেশের শ্রমিকদের হাতে তৈরি পিপিই। পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর ভাইস প্রেসিডেন্ট আরশাদ জামাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বেশ কিছু দেশীয় কারখানা পিপিই ও মাস্ক তৈরি করছে। ধারণা করছি বছরজুড়ে এ ধরনের পণ্যের আরও অর্ডার আসবে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে বিপুল পরিমাণ মেডিকেল গাউন, গ্লাভস জাতীয় সুরক্ষা উপকরণ রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। দেশীয় কোম্পানি বেক্সিমকো সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে ৬৫ লাখ মেডিকেল গাউন রপ্তানি করে। চলতি বছর প্রতিষ্ঠানটির কমপক্ষে ২৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের সুরক্ষা উপকরণ রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রাও রয়েছে। বেক্সিমকো কর্তৃপক্ষ জানান, তাদের ৪০ হাজারর কর্মীর ৬০ শতাংশই এখন পিপিই তৈরিতে নিযুক্ত। এমনকি আগামী তিন বছরের মধ্যে বিশ্ববাজারে অন্যতম প্রধান সরবরাহকারী হয়ে ওঠার লক্ষ্যে পিপিই শিল্প পার্ক স্থাপন করেছে বেক্সিমকো। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী সৈয়দ নাভেদ হুসাইন জানান, পিপিই উৎপাদনের নতুন কেন্দ্র হয়ে ওঠার মতো সব সুযোগ এখন বাংলাদেশের সামনে রয়েছে। এটা বিশ্ববাসীকে যেমন সুরক্ষিত করবে, ঠিক তেমনি গার্মেন্টস খাতের ৪১ লাখ কর্মীর কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা তৈরির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক অবদান রাখবে। বেক্সিমকো ছাড়াও ফকির অ্যাপারেলস দুই কোটি টাকার সার্জিক্যাল গাউনের অর্ডার পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের পাঁচটি কারখানা পিপিই প্ল্যান্টে রূপান্তর করেছে। আর অতিরিক্ত কাজের জন্য ৪০০ শ্রমিক নিয়োগ দিয়েছে। দেশের আরেক প্রতিষ্ঠান ¯েœাটেক্সও ফেসিয়াল মাস্ক রপ্তানি করেছে। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি ২.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ফেস্ক মাস্ক একটি ফরাসি প্রতিষ্ঠানের কাছে রপ্তানি করেছে। মার্স্ক এবং স্পেনসারের জন্য প্রতিষ্ঠানটি আরও এক লাখ পিপিই তৈরি করছে।

সর্বশেষ খবর