শুক্রবার, ১০ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

দেনার ভারে বিপর্যস্ত সাধারণ ব্যবসায়ীরা

-কাজী আমিনুল হক

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

দেনার ভারে বিপর্যস্ত সাধারণ ব্যবসায়ীরা

করোনার প্রভাবে খুলনায় ব্যবসা-বাণিজ্যে ধস নেমেছে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। একদিকে দোকানে বেচাকেনা বন্ধ, অন্যদিকে কর্মচারীদের বেতন, ঘরভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, ভ্যাট-ট্যাক্স দিতে হচ্ছে। পাশাপাশি জীবিকা নির্বাহের ব্যয়ও বেড়েছে কয়েকগুণ। এদিকে কাঁচা পাট, হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি বন্ধের পথে। দেনার ভারে বন্ধ হচ্ছে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রয়েছে চাকরি হারানোর আতঙ্ক। সংকট মেটাতে ব্যাংকগুলো প্রণোদনা বা ঋণ প্রদানেও সহযোগিতা করছে না। ফলে জীবন-জীবিকা নিয়ে বড় ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি কাজী আমিনুল হক। তিনি বলেন, গত তিন-চার মাসে আয়-রোজগার না থাকায় জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। খুলনার ছোট-বড় প্রায় ৫০ হাজার ব্যবসায়ীর  দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এক প্রকার বন্ধ রয়েছে। দোকানে কোনো বেচাকেনা নেই, প্রতিদিনই বাড়ছে দেনার পরিমাণ। খুলনার শপিং মল- মার্কেট, কাপড় ও কসমেটিক ব্যবসা, ইলেকট্র্রনিক্স পণ্যের ব্যবসা, কম্পিউটার ব্যবসাসহ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অসংখ্য কর্মচারী বেকার হয়ে গেছেন। লকডাউনে বাসা ভাড়া আর ভরণ-পোষণে অনেকের পুঁজি শেষ হয়ে গেছে। পরিস্থিতি এভাবে চলতে থাকলে অধিকাংশ ব্যবসায়ী ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়বেন। এদের মধ্যে আবার অনেকের দেউলিয়া হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। খুলনা চেম্বার সভাপতি বলেন, গত কয়েক মাসে হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানিতে ধস নেমেছে। ইউরোপ-আমেরিকায় একের পর এক এলসি বাতিল হয়েছে। ফলে চিংড়ি রপ্তানি, চিংড়ি কারখানা ও চাষি মিলিয়ে এই সেক্টরে বিপর্যয় নেমেছে।

 পাট রপ্তানির ক্ষেত্রেও ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। প্রায় ৫০ হাজার বেল কাঁচা পাট রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেছে। পাট ব্যবসায়ীদের শুধু গত জুন মাসের ব্যাংক ঋণের সুদ ব্লক করা হয়েছে, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত প্রণোদনা বা ঋণ সুবিধা দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, ব্যাংকের সঙ্গে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের তেমন লেনদেন বা ঋণের সম্পর্ক না থাকায় তারাও ব্যাংক থেকে ঋণ পাচ্ছে না। কাজী আমিনুল হক বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের ধাক্কা সামলাতে অনেক সময় লাগবে। এ সময় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বাঁচাতে প্রণোদনা দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রয়োজনে খুলনা চেম্বার অব কমার্স ও ব্যবসায়ী মালিক সমিতি ব্যাংক ঋণের গ্যারান্টার হতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর