শুক্রবার, ১০ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনামুক্ত হয়েও হচ্ছে মৃত্যু

উপসর্গ নিয়ে মারা গেলেন ১৫

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের বিভিন্ন জেলায় সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্টের মতো করোনা উপসর্গ নিয়ে আরও ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লায় সাতজন, রাজশাহীতে একজন, ঝিনাইদহে একজন, চুয়াডাঙ্গায় একজন, চাঁদপুরে দুজন ও ফেনীতে তিনজন মারা গেছেন। আবার কেউ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যাচ্ছেন। কেউ করোনামুক্ত হয়েও মৃত্যুবরণ করছেন। সংশ্লিষ্টদের বাড়িঘরও লকডাউন করেছে প্রশাসন। করোনা সন্দেহে পরিবারের সদস্যদের নমুনা সংগ্রহ করাও হচ্ছে। অনেককে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।

আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যানুযায়ী- কুমিল্লায় করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে সাতজন মারা গেছেন। গতকাল কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. সাজেদা খাতুন এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, ২৪ ঘণ্টায় চার নারীসহ নয়জন মারা গেছেন। দুজন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান এবং সাতজন উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। উপসর্গ নিয়ে যারা মারা গেছেন তারা হলেন- কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় এলাকার মিজানুর রহমান (৩৮), কুমিল্লা সদর উপজেলার কালিকাপুর এলাকার ফরিদ উদ্দিনের মেয়ে ফিরোজা বেগম (৬০), কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার তোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে রোকেয়া খাতুন (৬৫), কুমিল্লা মনোহরগঞ্জ উপজেলার আবদুল খালেকের ছেলে স্বপন (৩৮), কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার আবদুল্লাহর মেয়ে ফিরোজা বেগম (৬০), কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ঘনা মিয়ার ছেলে রফিকুল ইসলাম (৬৫) ও চাঁদপুর মতলব উপজেলার নিকিল সরকারের ছেলে নারায়ণ সরকার (৪০)।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তিনিও করোনা আক্রান্ত ছিলেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই তার মরদেহ গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়নি। এ ব্যক্তির নাম শ্যামাপদ (৬৫)। নওগাঁ সদর উপজেলার পাড় নওগাঁয় তার বাড়ি। ঝিনাইদহে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন একজন। গতকাল দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিসের মুখপাত্র ডা. প্রসেনজিত বিশ্বাস পার্থ। গতকাল সকাল ১০টার দিকে করোনার উপসর্গ নিয়ে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া মো. আল মামুন নামের একজন মারা গেছেন। চুয়াডাঙ্গায় করোনা উপসর্গ নিয়ে জমসেদ আলী (৬৭) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার রাতে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। রাতেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে মৃত ব্যক্তির দাফন সম্পন্ন হয়েছে। চাঁদপুরে করোনা উপসর্গে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। একজন চাঁদপুর সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে এবং অন্যজন ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা গেছেন। এরা দুজনই মতলব দক্ষিণ উপজেলার বাসিন্দা। তারা হলেন মতলব দক্ষিণ উপজেলার বিষ্ণুপুর এলাকার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর প্রধানিয়া (৪৫)। অপরজন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আনিসুজ্জামান চৌধুরী (৬৫)। তার দ্বিতীয় রিপোর্ট নেগেটিভ আসার কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে তিনি উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। জানা গেছে, আনিসুজ্জামান চৌধুরী গত ২৯ জুন থেকে করোনা আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার  নমুনার প্রথম রিপোর্ট পজিটিভ আসে। বুধবার দ্বিতীয় রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।  রাতে আবারও তার উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকরা  ঢাকা নেওয়ার পরামর্শ দেন। ঢাকায় নেওয়ার পথে গভীর রাতে অ্যাম্বুলেন্সেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার বাড়ি মতলব পৌরসভার কলাদী এলাকায়। করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে ফেনীর এক আইনজীবীসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার বিভিন্ন সময় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। তাদের মধ্যে দুজন মারা গেছেন ফেনী সদর হাসপাতালে। আরেকজন মারা গেছেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

জানা গেছে, করোনাভাইরাসের উপসর্গ জর, শ্বাসকষ্ট ও ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে ভুগে এক নারীসহ দুজন বুধবার তাদের হাসপাতালে মারা যান। এ ছাড়া করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে বুধবার রাতে ফেনীর একজন আইনজীবীর মৃত্যু হয়েছে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়। এ আইনজীবীর জর-শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে মঙ্গলবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে দুপুরের পর থেকে তার অবস্থার অবনতি হয়। রাত ৮টার দিকে তিনি মারা যান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর