বুধবার, ৭ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

রাজশাহীতে নতুন প্রজাপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীতে নতুন প্রজাপতি

দেশে নতুন ধরনের একটি প্রজাপতি প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে। রাজশাহী নগরীর শিমলা, টি-বাঁধ এলাকায় সর্বপ্রথম দেখা গেছে এই প্রজাপতি। গত ১ অক্টোবর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৃতিপ্রেমী চার শিক্ষার্থী প্রজাপতির নতুন এই প্রজাতি আবিষ্কার করেন। এর আগে দেশের অন্য কোথাও এটিকে দেখা যায়নি বলে তাদের দাবি। তারা জানিয়েছেন, যেহেতু এটি নতুন আবিষ্কার তাই এখনো এর বাংলা নাম দেওয়া হয়নি। তবে এর ইংরেজি নাম ‘কমন থ্রি রিং’ বা ‘আফ্রিকান রিংলেট’ এবং বৈজ্ঞানিক নাম ‘ইপথিমা অ্যাস্টেরোপ’। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ও রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ফটোগ্রাফি ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. ইমরুল কায়েস বলেন, ‘শিমলা, টি-বাঁধ এলাকায় আমাদের একটি বৈঠকের জায়গা আছে। আমরা যারা প্রকৃতি নিয়ে পড়াশোনা করতে আগ্রহী তারা সেখানে মাঝে মাঝে আড্ডা দেই। ১ অক্টোবর সেখানে আমাদের গ্রুপের সদস্য আকাশ মজুমদার, মাহমুদুল হক ওলি ও তুষার ইসলাম সর্বপ্রথম প্রজাপতিটি দেখতে পায়। প্রজাপতিটি আলাদা বুঝতে পেরে তারা আমাকে ফোনে বিষয়টি জানায়। তখন আমি তাড়াতাড়ি সেখানে গিয়ে ছবি তুলি। আমার আগেও তারা ছবি তুলেছিল। পরে প্রজাপতিটির পরিচয়ের জন্য ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া হয়। সেখানে বাংলাদেশের যারা বাটারফ্লাই সম্পর্কে অভিজ্ঞ তারা জানান যে, এটা ‘কমন থ্রি রিং’। সেখানেই নিশ্চিত হওয়া যায় যে, এই প্রজাপতিটি বাংলাদেশে প্রথম।’

প্রজাপতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে গিয়ে ইমরুল কায়েস বলেন, প্রজাপতির মধ্যে বেশ কিছু পরিবার আছে। তার মধ্যে ব্রাশ-ফুটেড বাটারফ্লাই অন্যতম। এর মধ্যে কিছু প্রজাপতি বাদামি রঙের হয়। তাদের গায়ে গোল গোল চক্র থাকে, যেটাকে আমরা রিং বলি। এই রিং জাতীয় প্রজাপতি আমাদের দেশে সচারচর তিন ধরনের দেখা যায়। সেগুলো হলো- কমন ফাইভ রিং, কমন ফোর রিং ও লেসার থ্রি রিং। এদের মধ্যে ‘লেসার থ্রি রিং’-টা বাংলাদেশে কম দেখা যায়। কিন্তু আমরা যে প্রজাপতিটি আবিষ্কার করেছি সেটা হচ্ছে ‘কমন থ্রি রিং’ বা ‘আফ্রিকান রিংলেট’। এর বৈজ্ঞানিক নাম ‘ইপথিমা অ্যাস্টেরোপ’। এটি ‘লেসার থ্রি রিং’ এর বড় জাতেরটা। বাংলা নাম দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এটি নতুন আবিষ্কার তাই এখনো বাংলা নাম দেওয়া হয়নি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণীবিদ্যার যারা অধ্যাপক আছেন তারা এটির নামকরণ করতে পারেন। বাংলা একাডেমিও দিতে পারবে, কিন্তু তাদের এগুলোতে তেমন আগ্রহ থাকে না। সাধারণত ল্যাটিন নামের বাংলা অনুবাদ বা যে এলাকায় সন্ধান পাওয়া যায় সে এলাকার মানুষরা সেটিকে কী নামে ডাকে এসবের ওপর ভিত্তি করে বাংলা নাম নির্ধারণ করা হয়। বন্যপ্রাণী আলোকচিত্রী মো. ইমরুল কায়েস জানান, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন) বাংলাদেশের ২০১৫ সালের সর্বশেষ তালিকা অনুযায়ী বাংলাদেশে রেকর্ড করা প্রজাপতির সংখ্যা ৩০৫টি। তবে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, দেশের বন-জঙ্গলসহ সমস্ত সমতল ভূমিতে প্রায় ৪০০ প্রজাতির প্রজাপতির অস্তিত্ব আছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর