মঙ্গলবার, ১৬ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

কাদের মির্জার বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা

নিহত সেই আলাউদ্দিনও আসামি

নোয়াখালী প্রতিনিধি

নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার আলোচিত মেয়র আবদুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে আরও একটি মামলা দায়ের হয়েছে। গতকাল দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২ নম্বর আমলি আদালতে এ মামলা দায়ের করেন মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানের স্ত্রী আরজুমান আরা।

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী হারুন অর রশিদ হাওলাদার জানান, মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও তার লোকজন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটে গত ৮ মার্চ সন্ধ্যায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে মারধর করে। এ সময় হামলাকারীরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক তৈরি করে। এ ঘটনায় মামলার বাদী আরজুমান আরা কোম্পানীগঞ্জ থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। যার কারণে আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়। আদালত বিকালে মামলার শুনানির জন্য রেখেছে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত রবিবার একই আদালতে আবদুল কাদের মির্জাসহ ১৬৪ জনের নাম উল্লেখ করে আলাউদ্দিন হত্যার ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। পরে আদালত শুনানি শেষে এই হত্যার ঘটনায় এরই মধ্যে কোথাও কোনো মামলা দায়ের হয়েছে কি না, তা আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে আদালতকে অবহিত করার জন্য কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়।

৯৭ জনের মামলার আবেদন ফেরত : নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানের ওপর হামলার ঘটনায় বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জাসহ ৯৭ জনের নামে মামলার আবেদন ফেরত দিয়েছে আদালত। আদালত সূত্র জানিয়েছে, বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানের ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলাটি আমলে নেওয়ার এখতিয়ার না থাকার কথা উল্লেখ করে আদালত আবেদনটি ফেরত দিয়েছে এবং বাদীকে আবেদনটি দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে দায়ের করার পরামর্শ দিয়েছে। গতকাল বিকালে নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৪ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মোসলেহ উদ্দিন মিজান বাদীর আবেদনের ওপর শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

পাল্টা মামলা : এদিকে কোম্পানীগঞ্জে চাপরাশির হাটে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বাদল, সেতুমন্ত্রীর দুই ভাগিনা মাহবুব রশিদ মঞ্জু ও ফখরুল ইসলাম রাহাত, খিজির হায়াত খান, নুরনবী চৌধুরী চেয়ারম্যানসহ ১০৫ জনের বিরুদ্ধে গতকাল নোয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২ নম্বর আমলি আদালতে মামলা দায়ের করেছেন কাদের মির্জার সমর্থক সালাউদ্দিন পিটন। বিকালে শুনানি শেষে আদালতের বিচারক এস এম মোছলেহ উদ্দিন মিজান মামলাটি আমলে নিয়ে পিপিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় চাপরাশির বাজারে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের সময় হামলার ঘটনায় এ মামলা দায়ের করা হয়।

দুজন আটক : গতকাল দুপুরে পুলিশের মামলায় কাদের মির্জার সমর্থক হোটেল রেস্তোরাঁর মালিক আবুল হাশেমকে আটক করা হয়ছে এবং অন্য একটি মামলায় আরও দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর জাহিদুল হক রনি।

মৃত্যুর এক সপ্তাহ পর আলাউদ্দিন ৩৬ নম্বর আসামি : নোয়াখালীর বসুরহাটের আওয়ামী লীগের বিবদমান দুই পক্ষের সংঘর্ষে মামলার আসামি থেকে রেহাই পায়নি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত সিএনজি চালক যুবলীগ কর্মী আলাউদ্দিন। কোম্পানীগঞ্জের চরকালী গ্রামের মৃত আলী আজ্জমের ছেলে সালাহ উদ্দিন পিটনের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২ নম্বর আমলি আদালতে দায়ের করা অভিযোগে আলাউদ্দিনকে ৩৬ নম্বর আসামি করা হয়েছে। তাও আলাউদ্দিন মৃত্যুর এক সপ্তাহ পর। মামলায় তার ছোট ভাই এমদাদ হোসেনকেও আসামি করা হয়েছে।

সোমবার দুপুরে মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারী সালাহ উদ্দিন পিটন (৪১), পিতা আলী আজ্জম, ৩ নম্বর ওয়ার্ড চরকালী, চরফকিরা বাদী হয়ে নোয়াখালী চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২ নম্বর আমলি আদালতে মামলা করেন। বিকালে বিচারক এস এম মোসলেহ উদ্দিন মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ  দেন।

সর্বশেষ খবর