সোমবার, ২৬ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

লঘুচাপে আশাভঙ্গ জেলেদের

রাহাত খান, বরিশাল

ভরা মৌসুমে ইলিশের আকাল দেখা দিয়েছে বরিশালের পোর্ট রোড ইলিশ মোকামে। নদী ও সাগর থেকে আহরিত কিছু ইলিশ মোকামে এলেও দাম চড়া। মাছের সরবরাহ কম থাকায় দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন মৎস্য শ্রমিকরা। গভীর সমুদ্রে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে মাছধরা ট্রলারগুলো শূন্য হাতে উপকূলে ফিরে আসায় বাজারে ইলিশের ঘাটতি দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন আড়তদাররা। তবে আগামী দিনগুলোতে মোকামে প্রচুর ইলিশ সরবরাহ হবে বলে আশা করছেন তারা। সাগরে সব ধরনের মাছ শিকারে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে গত ২৩ জুলাই। অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতেও এই মুহূর্তে ইলিশ শিকারে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। কিন্তু তার পরও দক্ষিণের সর্ববৃহৎ ইলিশ মোকাম পোর্ট রোড আড়ত অনেকটাই ইলিশ শূন্য। গতকাল রবিবার দেড় শ থেকে ২০০ মণ ইলিশ এসেছে মোকামে। এর আগে শনিবার প্রায় ৫০০ মণ এবং নিষেধাজ্ঞার পর দিন গত শুক্রবার প্রায় ৯০০ মণ ইলিশ এসেছে মোকামে। পোর্ট রোডের ইলিশ বিক্রেতা মো. হারুন জানান, নিষেধাজ্ঞা শেষে মাছ শিকার করতে গভীর সমুদ্রে যাওয়া ট্রলারগুলো খালি হাতে ফিরে এসেছে লঘুচাপের কারণে। অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতেও তেমন ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে বাজারে ইলিশের সরবরাহ একেবারে কম। আড়তে মাছ না থাকায় মাছের ওপর নির্ভরশীল শ্রমিকরা আয় রোজগার হারিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন বলে তিনি জানান।

আড়তদার নাসির উদ্দিন জানান, এখন ইলিশের ভরা মৌসুম। এই মুহূর্তে প্রতিদিন অন্তত হাজার মণ ইলিশ আসার কথা বরিশাল মোকামে। কিন্তু মোকাম অনেকটা ইলিশশূন্য। স্থানীয় নদ-নদীর কিছু ইলিশ মোকামে আসলেও চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় দাম চড়া।

গতকাল বরিশাল মোকামে এক কেজি ২০০ গ্রাম সাইজের প্রতি মণ ইলিশ পাইকারি ৪৬ হাজার, কেজি সাইজের প্রতি মণ ৪১ হাজার, রপ্তানিযোগ্য এলসি সাইজ (৬০০ থেকে ৯০০ গ্রাম) প্রতি মণ ৩৮ হাজার, ৪০০ থেকে সাড়ে ৫০০ গ্রাম সাইজের (ভেলকা) প্রতি মণ ২১ হাজার এবং গোটলা সাইজ (আড়াই শ থেকে সাড়ে ৩০০ গ্রাম) প্রতি মণ ১৭ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। ইলিশ ক্রেতা অঞ্জনা রায় বলেন, এখন ইলিশের যে দাম থাকা উচিত ছিল তার চেয়ে দাম অনেক বেশি। এই মুহূর্তে ইলিশের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে।

বরিশাল জেলা মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ রিপন বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া কেটে যাওয়ায় মাছধরা ট্রলারগুলো আবার গভীর সমুদ্রে যেতে শুরু করেছে। সাগর থেকে ট্রলারগুলো ফিরে এলে ইলিশের সরবরাহ বাড়ার পাশাপাশি দামও কমবে বলে আশা করেন তিনি। আষাঢ়-শ্রাবণ-ভাদ্র এই তিন মাস ইলিশের প্রধান মৌসুম হিসেবে বিবেচনা করা হয় বলে তিনি জানান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর