বৃহস্পতিবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

বিরল প্রজাতির ১৮ শকুন অবমুক্তির অপেক্ষায়

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

বিরল প্রজাতির ১৮ শকুন অবমুক্তির অপেক্ষায়

বিলুপ্তির পথে দিনাজপুরসহ বাংলাদেশের চিরচেনা তীক্ষè দৃষ্টির বিশালাকার পাখি শকুন। বিলুপ্তপ্রায় বিরল প্রজাতির অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধারকৃত এসব শকুন এখন পরিচর্যা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে অবমুক্তির অপেক্ষায়। উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় হিমালয়ানসহ বিভিন্ন বিরল প্রজাতির উদ্ধার শকুন দিনাজপুরের বীরগঞ্জ সিংড়া জাতীয় উদ্যানের পরিচর্যা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে আনা হচ্ছে। এ নিয়ে উদ্ধার বিরল প্রজাতির ১৮টি শকুন এই কেন্দ্রে রয়েছে। এসব শকুনকে রক্ষা ও প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় সুস্থ করে প্রতি বছর মার্চ-এপ্রিলের দিকে প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হয় বলে জানালেন সিংড়া জাতীয় উদ্যানের বনবিট কর্মকর্তা হরিপদ দেবনাথ। প্রশস্ত ডানার ওপর ভর করে এরা আকাশের অনেক ওপরে ওড়ে। এদের মাথা, গলা বা ঘাড়ে পালক নেই। এদের ডানা ঝাপটা আর সমস্বর বিকট শব্দে মানুষ বুঝতে পারে শকুন এসেছে। কিন্তু এখন আর সেই শকুনের দেখা পাওয়া যায় না। বট, পাকুড় কিংবা অশ্বত্থের মতো বড় বড় গাছে লোকচক্ষুর অন্তরালে শকুন বাসা বাঁধে।

এরা গুহায়, গাছের কোটরে বা পর্বতের চূড়ায় ১-৩টি সাদা বা ফ্যাকাসে ডিম পাড়ে। বিভিন্ন প্রাণীর মৃতদেহ শকুনের দল মুহূর্তেই খেয়ে সাবাড় করে ফেলে। ফলে পচন ধরা গলিত মৃতদেহগুলো থেকে সংক্রামক রোগ ছড়াতে পারে না। বীরগঞ্জের সিংড়া জাতীয় উদ্যানে পরিচর্যা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন ১৮ শকুনের জন্য প্রতিদিন ব্রয়লার মুরগি দেওয়া হয়। এ ছাড়াও স্যালাইন, পানি ওষুধ দেওয়া হয় বলে জানান শকুনের দেখভালের তদারককারী বেলাল হোসেন। বনবিট কর্মকর্তা হরিপদ দেবনাথ জানান, হিমালয় এবং ভুটানে শীতের প্রকোপ বাড়লে দল বেঁধে শকুন আসে এবং বড় বড় গাছে আশ্রয় নেয়। এই শকুন শীতের সময় এ অঞ্চলে অসুস্থ বা খাদ্যাভাবে ক্লান্ত অবস্থায় আসে।

সেসব শকুনকে উদ্ধার করে সিংড়া জাতীয় উদ্যানে পরিচর্যা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে আনা হয়। পুরোপুরি সুস্থ হলে সেটিকে প্রকৃতিতে আবার ছেড়ে দেওয়া হয়। সিংড়া জাতীয় উদ্যানে ৫ বছর ধরে দেশে বিলুপ্ত ও বিপন্ন প্রায় শকুনকে বাঁচাতে আইইউসিএন বাংলাদেশ ও বনবিভাগ যৌথভাবে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

সর্বশেষ খবর