মঙ্গলবার, ১৭ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

দুই ভাইকে গাছে বেঁধে নির্যাতন

নড়াইল প্রতিনিধি

দুই ভাইকে গাছে বেঁধে নির্যাতন

নড়াইলে ছাগল চুরির অভিযোগে দুই ভাইকে গাছের সঙ্গে বেঁধে বাঁশের লাঠি ও কঞ্চি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে এবং শরীরে জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নির্যাতনের ভিডিওটি ভাইরাল হয়। পরে বিষয়টি পুলিশের নজরে এলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তারা। রবিবার সকাল ৮টার দিকে লোহাগড়া থানার কোটাকোল ইউনিয়নের মাটিয়াডাঙ্গা গ্রামে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। নির্যাতিতরা বর্তমানে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নির্যাতনের শিকার দুই ভাই হলেন- উপজেলার মাটিয়াডাঙ্গা গ্রামের রশিদ শেখের ছেলে ফরিদ শেখ (৩০) ও রউফ শেখের ছেলে তরিক শেখ (২৩)। তারা সম্পর্কে পরস্পর চাচাতো ভাই।

প্রত্যক্ষদর্শী এবং আহতদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শনিবার রাতে মাটিয়াডাঙ্গা গ্রামের হাই মুন্সির একটি ছাগল হারিয়ে যায়। ওই ছাগল চুরির অভিযোগে ফরিদ শেখ ও তরিক শেখকে রবিবার সকাল ৮টার দিকে মিথ্যা কথা বলে ডেকে আনা হয়। পরে একই গ্রামের নান্নু শেখের দোকানের সামনে দুটি গাছে দুজনকে পৃথকভাবে বেঁধে চালানো হয় নির্যাতন। এ সময় কোটাকোল ইউপি সদস্য আবু কালাম মুন্সির নেতৃত্বে নান্নু শেখ, আজমল মুন্সি, ইছাহাক মুন্সী, আছাদ মুন্সী, জহুর মুন্সী, তাজুমল মুন্সী, মিল্লাত শেখ, কোরবান মুন্সী, ইজাজুল মুন্সি ও রমজান মুন্সিসহ অনেকে তাদের গাছের সঙ্গে হাত-পা বেঁধে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারপিট শুরু করেন। এ সময় তাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকা দেওয়া হয়।

 দীর্ঘ সময় চলা ওই নির্যাতনের মধ্যেই খবর আসে নান্নু মুন্সির বাড়িতে হারানো ছাগল ফিরে এসেছে। তখন নির্যাতনের শিকার দুই যুবককে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে নির্যাতিত পরিবারের লোকজন তাদের উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। নির্যাতিত তরিক শেখের ভাই এরশাদ শেখ বলেন, আমার ভাই ও চাচাতো ভাই ফরিদ শেখকে ঘর উঠানোর কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ছাগল চুরির মিথ্যা অভিযোগে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করে। এমনকি তাদের শরীরে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেওয়া হয়। শরীরের বিভিন্ন স্থানে এখনো সিগারেটের ছ্যাঁকার চিহ্ন দগ দগ করছে। গ্রাম্য শত্রুতার জেরে এমন জঘন্য নির্যাতন করা হয়েছে। কোটাকোল ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবু কালাম মুন্সি বলেন, নির্যাতিত যুবকরা প্রকৃতপক্ষে গাজা সেনবকারী। তাদের বিরুদ্ধে ছাগল চুরির অভিযোগটিও সত্য। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হারানো ছাগল খুঁজে পাওয়া যায়। প্রথমে আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। পরে ঘটনা জানতে পেরে আরেক ইউপি সদস্য মুন্সী বদীরুজ্জামানকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ছাগলের মালিককে অনুরোধ করে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। আমি তাদের নির্যাতন করিনি। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এ প্রসঙ্গে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবু হেনা মিলন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নির্যাতনের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর