বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

যানজটে সীমাহীন দুর্ভোগ রাজধানীতে

নিজস্ব প্রতিবেদক

যানজটে সীমাহীন দুর্ভোগ রাজধানীতে

ভয়াবহ যানজটের এক অভিশপ্ত দিন দেখল রাজধানীবাসী। বাসে চড়ে মাত্র ৬-৭ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে লেগে গেল দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। গুলিস্তান থেকে টঙ্গী পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার পথ যেতে টানা ৭-৮ ঘণ্টা বাসে বসে থাকার অভিজ্ঞতাও হয়েছে অনেকের। গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির কারণে বাস থেকে নেমে গন্তব্যের উদ্দেশে হাঁটা দেওয়ার সুযোগটাও ছিল না। গতকাল সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এ ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে নগরবাসীকে।

জানা গেছে, বৃষ্টিতে ঢাকা-গাজীপুর মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়ায় এ যানজট সৃষ্টি হয়, যার প্রভাব পড়ে পুরো রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থায়। গুলশান পর্যন্ত ভিভিআইপি মুভমেন্টের কারণে রাজধানীর কয়েকটি সড়কে দীর্ঘ সময় যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখায় যানজটের ব্যাপকতা বৃদ্ধি পায়। উত্তরার বাসিন্দা মিন্টু বিশ্বাস বলেন, দুপুরে মতিঝিলে একটা জরুরি মিটিং ছিল। সকাল সাড়ে ৯টায় উত্তরা থেকে রওনা হয়ে বনানী আসতেই বেজে যায় ১টা। পরে গাড়ি থেকে নেমে রিকশায় অলিগলি দিয়ে নর্দ্দায় এসে অন্য একটি কাজ সারি। এদিকে যানজটের কারণে গতকাল রাজধানীর অধিকাংশ মানুষই সময়মতো কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারেননি। নির্ধারিত  সময়ে হাসপাতালে পৌঁছাতে না পারায় করাতে পারেননি চিকিৎসা। ব্যাংকিং আওয়ার শেষ হয়ে যাওয়ায় সারতে পারেননি প্রয়োজনীয় লেনদেন। শিক্ষার্থীরাও সময়মতো পৌঁছাতে পারেনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। যানজট নিয়ন্ত্রণে সকাল থেকেই হিমশিম খেতে দেখা গেছে ট্রাফিক পুলিশকে। ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়ে ও প্রগতি সরণির এয়ারপোর্টমুখী সড়ক গতকাল দিনভর স্থবির ছিল। বিমানবন্দর সড়ক তথা তেজগাঁও থেকে উত্তরার আবদুল্লাহপুর, মালিবাগ থেকে খিলক্ষেত হয়ে টঙ্গীমুখী সড়কে দুই কিলোমিটার পাড়ি দিতে লেগে যায় এক-দেড় ঘণ্টা। ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডের যানজটের প্রভাব পড়ে মিরপুর ইসিবি চত্বর পর্যন্ত। এ ছাড়া মিরপুর-১০ থেকে বিজয় সরণি, কারওয়ান বাজার হয়ে শাহবাগ পর্যন্ত সড়কেও যানজটের মাত্রা বেশি দেখা গেছে। আবদুস সবুর নামে এক যাত্রী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সকাল সাড়ে ৯টায় রামপুরা ব্রিজ থেকে বাসে উঠে কুড়িল বিশ্বরোড পৌঁছাতে ১২টা বেজে গেছে। অথচ জ্যাম না থাকলে এটুকু পথ মাত্র ২০ মিনিটে আসা যায়। যানজট থাকলেও এক ঘণ্টার বেশি লাগে না। যানজটের চিত্র ফুটে ওঠে ফেসবুকেও। অসংখ্য মানুষ এয়ারপোর্ট রোডে কী হয়েছে জানতে চেয়ে স্ট্যাটাস দেন। আহমেদ মোস্তফা কামাল নামে এক ব্যক্তি ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘মগবাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার যানজট। ওদিকে গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত। বিকল্প পথ ধরতে গিয়ে যানজট ছড়িয়ে পড়েছে তেজগাঁও, গুলশান, বনানীসহ আশপাশ এলাকায়। গুগল ম্যাপ লালে লাল। ফেসবুকের ট্রাফিক অ্যালার্ট গ্রুপ থেকে জানা যায়, ভিভিআইপি মুভমেন্টের কারণে সব গাড়ি বন্ধ করে রাখা হয়েছে বিমানবন্দরের কাছে।

আমিও তিন ঘণ্টা ধরে পথেই বসে আছি। কিছু বলব না। অসহ্য।’ উত্তরা ট্রাফিক বিভাগের ডেপুটি কমিশনার নাবিত কামাল শৈবাল গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘গাজীপুরের চেরাগ আলীতে গাড়ি চলাচল একরকম বন্ধ। মুন্নু সিরামিকের সামনের রাস্তা ভাঙা থাকায় সেখানে সড়কে বৃষ্টির পানি জমায় গাড়ি চলাচলে সময় লাগছে। এ কারণেই তীব্র যানজট। গাজীপুরমুখী পুরো সড়ক অনেকটা স্থবির। ১০-১৫টা করে গাড়ি পাস করাতে আমাদের আধঘণ্টারও বেশি লাগছে। আমরা সেখানকার ট্রাফিক পুলিশকে অনুরোধ জানিয়েছি বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নিতে।’

সর্বশেষ খবর