ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দাবি আদায় না হওয়ায় আইনজীবীদের আদালত বর্জন কর্মসূচি আরও তিন দিন বাড়ানো হয়েছে। গতকাল প্রথম দফায় ডাকা তিন দিনের আদালত বর্জন কর্মসূচির শেষ দিনে বিকালে আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে সাধারণ সভা শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নতুন ঘোষিত কর্মসূচির আওতায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কোনো আদালতের এজলাসে যাবেন না আইনজীবীরা। এর আগে গতকাল প্রথম দফায় ডাকা কর্মসূচির শেষ দিনে সকাল থেকে কোনো আদালতে যাননি তারা। আইনজীবী সমিতির কার্যালয় চত্বরে অবস্থান নিয়ে তারা তাদের কর্মসূচি পালন করেন। এতে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়।
এদিকে টানা আদালত বর্জন কর্মসূচির কারণে বিচারপ্রার্থীরা দূর-দূরান্ত থেকে এলেও স্বাভাবিক কার্যক্রম না থাকায় তাদের ফিরে যেতে হয়েছে। এতে তারা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
ভুক্তভোগী বিচারপ্রার্থীরা জানান, শুনানি, হাজিরাসহ কোনো মামলার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে না। কেবল নতুন তারিখ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট তানভীর ভুইয়া বলেন, তিন কার্য দিবসের মধ্যে দাবি আদায় না হওয়ায় আমরা আদালত বর্জন কর্মসূচি আরও তিন দিন বর্ধিত করেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন বর্জন অব্যাহত থাকবে। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মোস্তফা কামাল বলেন, বিচারকরা এজলাসে নিয়মিত এলেও আইনজীবীরা না আসায় আদালতের কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি বিচারপ্রার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। উল্লেখ্য, পয়লা ডিসেম্বর একটি মামলা দায়েরকে কেন্দ্র করে আইনজীবী সমিতির নেতাসহ একাধিক আইনজীবীর সঙ্গে নারী ও শিশু-১ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের বিতণ্ডা হয়। সময় পার হয়ে যাওয়ায় নিয়ম অনুসারে বিচারক মামলাটি নিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ক্ষিপ্ত হন আইনজীবীরা। এ ঘটনায় ২৬ ডিসেম্বর সভা করে ১ জানুয়ারি থেকে সংশ্লিষ্ট আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয় জেলা আইনজীবী সমিতি। এ ছাড়া তারা জাল স্ট্যাম্প ও বিভিন্ন দুর্নীতিতে জড়িত আদালতের নাজির মোমিনুল ইসলামের অপসারণের দাবি জানান। এর প্রতিবাদে বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে কর্মবিরতি ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এদিকে নারী ও শিশু-১ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের আদালত চলাকালে কয়েকজন আইনজীবী অশোভন আচরণের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ তিন আইনজীবীকে ১৭ জানুয়ারি সশরীরে আদালতে হাজির থাকার আদেশ দেন।