শনিবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

পাসপোর্টে জাল সিল স্বপ্ন আমেরিকা যাত্রা!

আলী আজম

পাসপোর্টে জাল সিল স্বপ্ন আমেরিকা যাত্রা!

কম্বোডিয়া, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ ভ্রমণের জাল সিল পাসপোর্টে সংযুক্ত করে আমেরিকার ভিসা পাওয়ার জন্য আবেদন করে তিন যুবক। কিন্তু আমেরিকা অ্যাম্বাসির কাছে তাদের পাসপোর্টে দেওয়া সিলগুলো জাল বলে প্রতীয়মান হয়। একটি চক্রের সহযোগিতায় ওরা চেয়েছিল প্রতারণার মাধ্যমে আমেরিকায় যেতে। কিন্তু তাদের ভাগ্য সহায় হয়নি। আমেরিকা পাড়ি দেওয়ার আগেই ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) জালে আটকা পড়ে চক্রের ছয় সদস্য। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে প্রতারণার পেছনের গল্প। ট্রাভেলস এজেন্সি কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে তারা ভিসা ও সিল তৈরি করে পাসপোর্টে ব্যবহার করে। আর সেই পাসপোর্ট জমা দিয়ে আমেরিকায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছিল ওরা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিভিন্ন দেশে ভ্রমণের তথ্য দিয়ে তিনজন আমেরিকায় যাওয়ার জন্য আবেদন করে। এর মধ্যে পলাশ চন্দ্র দাস মালদ্বীপ ও মালয়েশিয়া ভ্রমণ; মাহবুবুর রহমান খান কম্বোডিয়া ও মালদ্বীপ ভ্রমণ এবং মো. মিলন মালদ্বীপ ভ্রমণের তথ্য দিয়ে আমেরিকান ভিসার জন্য আবেদন করে। কিন্তু এই পাসপোর্টধারীদের ভিসা জাল বলে প্রমাণ পায় আমেরিকান অ্যাম্বাসি। পরে এ বিষয়ে আমেরিকান অ্যাম্বাসি কর্তৃপক্ষ গুলশান থানায় মামলা করে। সেই মামলার তদন্তে নামে ডিবি। তদন্তে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছয়জনকে শনাক্ত করে। বুধবার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম উত্তর বিভাগ। তারা হলেন- পলাশ চন্দ্র দাস, ওয়াহিদ উদ্দিন, শফিকুল ইসলাম সুমন, মাহবুবুর রহমান খান, মো. আবু জাফর ও মো. আরিফুর রহমান। এদের মধ্যে পলাশ ও মাহবুবুর জালিয়াতি করে আমেরিকায় যাওয়ার চেষ্টা করছিল। গ্রেফতার অন্যরা হলো- ট্রাভেলার্স ডায়েরি এজেন্সির মালিক ওয়াহিদ উদ্দিন ও তার সহযোগী শফিকুল ইসলাম সুমন এবং হ্যাপি হলিডেস এজেন্সির মালিক মো. আরিফুর রহমান ও তার সহযোগী মো. আবু জাফর। তাদের কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত ৪টি জাল সিল ও ৩টি পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা আমেরিকান ভিসা প্রার্থীদের ভিসা প্রাপ্তির জন্য নানা অবৈধ পন্থার কথা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। তারা প্রতারণার উদ্দেশ্যে আমেরিকান ভিসা প্রার্থীদের সঙ্গে ১০-১৫ লাখ টাকা চুক্তি করে। প্রার্থীদের আমেরিকান ভিসা পাইয়ে দেবে বলে নিশ্চয়তা দেয় প্রতারকরা। আমেরিকান ভিসা প্রার্থীদের সম্মতিতে প্রতারক চক্র প্রার্থীকে পাসপোর্টের গুরুত্ব বাড়াতে বিভিন্ন দেশের জাল ভিসা এবং বিভিন্ন দেশের ইমিগ্রেশনের ইন/আউট এর জাল সিল নিজেরা তৈরি করে প্রার্থীদের পাসপোর্টে সংযুক্ত করে। পরে আমেরিকান অ্যাম্বাসিতে ইন্টারভিউর ব্যবস্থা করে।

ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম উত্তর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ জানান, গ্রেফতারকৃত চক্রটি ২-৩ বছর ধরে এ ধরনের জাল সিল এবং জাল ভিসা পাসপোর্টে সংযুক্ত করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বৃহস্পতিবার তাদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হলে আদালত দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ডিবি কর্মকর্তা তারেক আরও বলেন, এই চক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্যদের ধরতে অভিযান চলছে।

সর্বশেষ খবর