বুধবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

দৌড়ঝাঁপ দুই দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

দৌড়ঝাঁপ দুই দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের

চুয়াডাঙ্গা জেলার দুটি আসনেই দুই বড় দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন। একটি আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীর তৎপরতাও চোখে পড়েছে। গণসংযোগের পাশাপাশি নানাভাবে প্রচার শুরু করেছেন তারা। ছুটছেন নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি। মনোনয়নপ্রত্যাশীরা এলাকার বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীদের রংবেরঙের ব্যানার-ফেস্টুন চোখে পড়ছে নির্বাচনী এলাকাগুলোয়।

এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, নির্বাচনের খানিকটা দেরি থাকলেও এখনই মাঠে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সরব উপস্থিতি রয়েছে। আওয়ামী লীগের আসন ধরে রাখার প্রত্যয়, আর বিএনপির আসন পুনরুদ্ধারের লড়াই জমে উঠেছে। এ নিয়ে হাটে-মাঠে-ঘাটে আলোচনার কমতি নেই। আর অতীত ইতিহাসের সুখস্মৃতি নিয়ে মাঠে আছেন জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীও।

চুয়াডাঙ্গা-১ (সদর) : এ আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই দলেই শক্তিশালী প্রার্থী থাকলেও মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যাও কম নয়। আওয়ামী লীগে তিনবারের সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন শক্তিশালী প্রার্থী। অন্যদিকে বিএনপি প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদুও দেশব্যাপী সুপরিচিত নেতা। এ দুজন শক্তিশালী নেতা ছাড়াও দুই দলের আরও অন্তত ১০ জন দলীয় মনোনয়ন পেতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।

আসনটি দীর্ঘদিন বিএনপির দখলে থাকলেও ২০০৮ সালে দখল নেয় আওয়ামী লীগ। বর্তমানেও তা অক্ষুণœ রয়েছে। এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকায় আরও যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি বর্তমান সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশাদুল হক বিশ্বাস, জেলার সাবেক যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সংসদ সদস্যের সহোদর সাবেক পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সেখ সামসুল আবেদীন খোকন, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু এবং ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের স্বত্বাধিকারী ও বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা। বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকায় আরও যাদের নাম আলোচনায় আছে তারা হলেন- জেলা বিএনপির সদস্যসচিব শরীফুজ্জামান শরীফ, বাংলাদেশ সরকারের সাবেক যুগ্মসচিব ড. মো. আব্দুস সবুর (এম এ সবুর), জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস, আলমডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র মীর মহিউদ্দিন ও চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপি সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মণি। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেনের নাম শোনা যাচ্ছে।

 

চুয়াডাঙ্গা-২ (দামুড়হুদা-জীবননগর) : এ আসনে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থীর সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীদের নির্বাচনী কর্মকান্ড চোখে পড়ছে। এখানে আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য আলী আজগার টগর যেমন রয়েছেন অনেকটা খোশমেজাজে, তেমনই বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় উপ-কোষাধ্যক্ষ ও জেলা আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবুও ছক কষছেন মনোনয়ন আদায় এবং জয় সুনিশ্চিত করতে। এ আসনে ভোটের মাঠে জামায়াত ফ্যাক্টর হওয়ায় সাংগঠনিক ও দলীয় কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছেন জেলা জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন। আসনটি দীর্ঘদিন বিএনপি কিংবা বিএনপি-জামায়াত জোটের দখলে থাকলেও ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আলী আজগার টগর চমক দেখান।

এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকায় যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য হাজী আলী আজগার টগর, সাবেক সহ-সভাপতি নজরুল মল্লিক, জেলা সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ ও দামুড়হুদা উপজেলা সভাপতি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান মন্্জু। এ আসনে দীর্ঘদিন শক্ত হাতে হাল ধরে রেখেছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাজি মোজাম্মেল হক। তিনি এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনবার। তার মৃত্যুর পর এ আসনে শক্ত অবস্থান গড়ে তোলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় উপ-কোষাধ্যক্ষ ও জেলা আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবুু। কর্মী সমাবেশ ও ভোটারদের সঙ্গে গণসংযোগও করছেন তিনি। তবে বিএনপি-সংশ্লিষ্ট অনেকেই মনে করছেন, দীর্ঘদিন চুয়াডাঙ্গায় দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা কম। নির্বাচনের আগে হঠাৎ করেই তাদের মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা বাড়তে পারে বলে অনেকের ধারণা। জামায়াতে ইসলামীর প্রয়াত নেতা মাওলানা হাবিবুর রহমান এ আসনে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হন। সেই সুখস্মৃতি নিয়ে প্রতি নির্বাচনেই মনোনয়ন পেতে মাঠে ছিলেন জামায়াতের প্রার্থীরা। এবার দলের জেলা সেক্রেটারি রুহুল আমিনকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান দলের নেতা-কর্মীরা। চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে বড় দুই দলের বাইরে জাসদের জেলা সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম বাবুও নানা কর্মকান্ডের মাধ্যমে প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি জানান দিচ্ছেন।

সর্বশেষ খবর