বুধবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

নিখোঁজ সাংবাদিক রঘুনাথকে গ্রেফতার দেখাল পুলিশ

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

সাতক্ষীরায় সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁকে আটক করেছে পুলিশ। দেবহাটা থানার একটি চাঁদাবাজি ও একটি নাশকতা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। ঘের ব্যবসায়ী কাজী সুরুজ ওয়ারেশের দায়ের করা চাঁদাবাজি ও দেবহাটা থানার এসআই চাঁদ আলীর দায়ের করা বিস্ফোরক ও নাশকতা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ মামলায় সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁ ছাড়াও কালীগঞ্জ থানার মোতাকাব্বিরের ছেলে ফারুক হোসেন ও দেবহাটা থানার টেপুখালী গ্রামের ফজর আলী গাজীর ছেলে রেজাউল করিম এবং দেবহাটা থানার চালতেতলা গ্রামের নওশের হালদারের ছেলে লুৎফর রহমানসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁ সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের মদনমোহন খাঁর ছেলে। তিনি দীপ্ত টেলিভিশন ও প্রজন্ম একাত্তর পত্রিকার সাতক্ষীরা প্রতিনিধি। এদিকে গতকাল সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবে এসে রঘুনাথ খাঁর স্ত্রী সুুপ্রিয়া রানি খাঁ ও তার আত্মীয়-স্বজনরা জানান, রঘুুনাথ খাঁকে ডে নাইট কলেজ মোড় এলাকা থেকে সাদা পোশাকধারী পুলিশ উঠিয়ে নিয়ে গেছে। তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের দেওয়া প্রেসনোট ও দেবহাটা থানার ওসি শেখ ওবায়েদুল্লাহ জানান, দেবহাটা উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের গোলাম ওয়ারেশের ছেলে কাজী সুরুজ ওয়ারেশ একজন ঘের ব্যবসায়ী। তার কাছে চাঁদাবাজ রঘুনাথ খাঁ, আনারুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম ও রফিকুল ইসলামসহ অন্য আসামিরা ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। দুই দিনের মধ্যে টাকা না দিলে ওই মৎস্য ঘের লোক দিয়ে জবরদখল করে নেবে। পুুলিশ প্রেসনোটে আরও জানায়, রঘুনাথ খাঁ, কালীগঞ্জ থানার মোতাকাব্বিরের ছেলে ফারুক হোসেন ও দেবহাটা থানার টেপুখালী গ্রামের ফজর আলী গাজীর ছেলে রেজাউল করিম এবং দেবহাটা থানার চালতেতলা গ্রামের নওশের হালদারের ছেলে লুৎফর রহমান সোমবার সন্ধ্যায় দেবহাটার খলিসাখালী গ্রামের সামারা খালের ব্রিজের ওপর গাছের গুঁড়ি ও বাঁশ দিয়ে অবরোধ করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এবং মাছের ঘের দখলের চেষ্টা করে। বিষয়টি জানার পর দেবহাটা থানা পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে ককটেল ও বিস্ফোরক দ্রব্যসহ রঘুনাথ খাঁকে গ্রেফতার করে, অন্য আসামিরা পালিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থ থেকে বোমাসদৃশ পাঁচটি ককটেল উদ্ধার করে। এ ঘটনায় দেবহাটা থানায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩) ধারা ও  ২৫-ডি তৎসহ ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক উপাদানাবলি আইনে মামলা হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় তাকে গ্রেফতার করে গতকাল দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়। পুুুলিশ আরও জানায়, চাঁদাবাজি ও বিস্ফোরক দ্রব্য মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে রঘুনাথ খাঁর বিরুদ্ধে। ২০০৭ সালের ১৪ মে যৌথবাহিনীর অভিযানে সাতক্ষীরা ফুড অফিস মোড় থেকে তৎকালীন তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের গাড়িচালক ইমান আলীর কাছ থেকে চাঁদার টাকা নেওয়ার সময় হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় রঘুনাথ খাঁর বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর থানায় দ্রুত বিচার আইনে ঘটনার দিনই মামলা হয়। মামলা নম্বর-২৬, এ মামলায় সাতক্ষীরা আদালত রঘুনাথ খাঁকে চার বছর কারাদ   প্রদান করেন। এ ছাড়া রঘুুনাথ খাঁ তার মা ও বাবাকে মারপিট করে হত্যার চেষ্টাসহ বাড়ি থেকে মালামাল নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় গর্ভধারিণী মা শ্রীমতী ঝরনা রানী বাদি হয়ে ২০০৭ সালে ২৪ মার্চ রঘুনাথের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানয় মামলা করেন। মামলা নম্বর ২৭। এ ছাড়া রঘুনাথ খাঁর বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি ও কালীগঞ্জ থানায় চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ব্যক্তির দায়ের করা আরও তিনটি মামলা রয়েছে।

সর্বশেষ খবর