বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

দূষণের কারণ জানা ব্যবস্থা নেই

-ড. কামরুজ্জামান মজুমদার

দূষণের কারণ জানা ব্যবস্থা নেই

স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ও বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) পরিচালক অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেছেন, রাজধানী ঢাকার ৬০ ভাগ বায়ুদূষণ হয় নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চার মাসে। অর্থাৎ, শুষ্ক মৌসুমে। বাকি ৪০ ভাগ হয় আট মাসে। এর পেছনের কারণ সবার জানা, কিন্তু সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, অধিকাংশ নির্মাণকাজ হয় শীতকালে। এসব কাজে নির্মাণবিধি মেনে ধুলা নিয়ন্ত্রণ করা হয় না। এ সময় ইটভাটাগুলোও সচল থাকে। বিভিন্ন স্থানে বর্জ্য পোড়ানো হয়। গতকালও ঢাকায় শতাধিক স্থানে বর্জ্য পোড়ানো হয়েছে। কয়েকটি স্থানের ছবিও আমি তুলে এনেছি। এ ছাড়া ১১০টি বেশি স্থানে দীর্ঘসময় ধরে খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। আগারগাঁও, শান্তিনগর, মেরাদিয়া, কমলাপুরসহ বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। রাস্তা খুঁড়ে সেই মাটি রাখা হয়েছে রাস্তার ওপর। সব যানবাহন ওই মাটির ওপর দিয়ে ধুলা উড়িয়ে যাচ্ছে। নির্মাণবিধি না মেনে নির্মাণকাজ চলছে। এতে ধুলার সৃষ্টি হচ্ছে। কালো ধোঁয়া ছাড়া ফিটনেসবিহীন যানবাহন, যানজট, অতিরিক্ত যানবাহন তো আছে। মূলত দূষণের উৎসগুলো আমরা অনেক আগেই চিহ্নিত করেছি। কিন্তু, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়ায় সংকটের সমাধান হচ্ছে না। আর এ দূষণের খেসারত দিতে হচ্ছে নগরবাসীকে। নানা রোগ-ব্যাধি বাড়ছে। শিশুদের অবস্থা কাহিল। ছোট ছোট বাচ্চাদের ইনহেলার ব্যবহার করতে হচ্ছে। ফুসফুসের ডাক্তারের কাছে লম্বা সিরিয়াল।

তিনি বলেন, সারা বছরই মূলত দূষণ থাকে। তবে বর্ষা হলে দূষণ কিছুটা প্রশমিত হয়। গবেষণায় দেখেছি, ২০১৬ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ছয় বছরে ঢাকার মানুষ মাত্র ২ শতাংশ (৩৮ দিন) সময় ভালো বায়ু গ্রহণ করেছে। ২৬ শতাংশ (৫১০ দিন) চলনসই মানের বায়ু, ২৯ শতাংশ (৫৭৭ দিন) সংবেদনশীল বায়ু, ২২ শতাংশ (৪৪৩ দিন) অস্বাস্থ্যকর, ১৯  শতাংশ (৩৮৫ দিন) খুব অস্বাস্থ্যকর এবং ২ শতাংশ (৩৭ দিন) দুর্যোগপূর্ণ ছিল ঢাকার বায়ু। ঢাকার বায়ু সর্বোচ্চ দূষিত থাকে জানুয়ারিতে, দ্বিতীয় থাকে ডিসেম্বরে, তৃতীয় ফেব্রুয়ারিতে ও চতুর্থ মার্চে। বৃষ্টির কারণে জুন-জুলাইয়ে সবচেয়ে ভালো থাকে। গতকাল ঢাকা উত্তরের ছয় স্থানে রাস্তায় পানি ছিটাতে দেখেছি। দক্ষিণে দেখিনি। দূষণ এলাকাগুলোয় নিয়মিত পানি ছিটালে দূষণ কিছুটা কমত।

সর্বশেষ খবর