শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বাবার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য শিমুর মেয়ের

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাবার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য  শিমুর মেয়ের

চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমু হত্যা মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছে তার কিশোরী মেয়ে অজিহা আলিম রিদ। এ সময় সে জানিয়েছে, প্রায়ই তার বাবার পিটুনির শিকার হতে হতো মাকে। ঢাকার আলোচিত এ মামলায় বিচার শুরুর পর সাক্ষ্য গ্রহণের দ্বিতীয় দিন ছিল গতকাল। রিদ যখন সাক্ষ্য দিচ্ছিল, আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে মেয়ের জবানবন্দি শুনছিলেন বাবা সাখাওয়াত আলী নোবেল।

গতকাল আদালতে জবানবন্দিতে অজিহা আলিম রিদ জানায়, ঘটনার দিন সে অন্য ঘরে ঘুমাচ্ছিল। বেলা ২টার পর সে জানতে পারে তার মা নিখোঁজ। ‘আমার বাবার সঙ্গে মায়ের সম্পর্ক ভালো ছিল না। বাবা প্রায়ই মাকে মারধর করত। ঘটনার দুই দিন পর বাবা জেলখানা থেকে ফোন করেন। আমায় বলেন, মা আমি ভুল করেছি। আমাকে মাফ করে দিও।’

আলোচিত এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামের আদালতে। গতকাল রিদ জবানবন্দি দেওয়ার পর আসামিপক্ষের আইনজীবী তাকে জেরা করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ার সরদার জানান, এ দিন জেরা শেষ না হওয়ায় আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি অবশিষ্ট জেরা ও পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করেছেন আদালত। এর আগে, মামলার বাদী শিমুর ভাই হারুন অর রশীদকে জেরা শেষ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী।

অভিনেত্রী শিমু (৪০) স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে রাজধানীর গ্রিন রোড এলাকার বাসায় থাকতেন। গত বছর ১৬ জানুয়ারি বাসা থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি তিনি। তার সন্ধানে পরদিন কলাবাগান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন স্বামী নোবেল। সেদিন দুপুরে স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে কেরানীগঞ্জের হজরতপুর ব্রিজের কাছে আলিয়াপুর এলাকায় রাস্তার পাশে বস্তা থেকে শিমুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।  মামলা হওয়ার পর ওই রাতেই নোবেল ও তার বাল্যবন্ধু এস এম ফরহাদকে আটক করে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

পরদিন তাদের আদালতের মাধ্যমে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, দাম্পত্য কলহের জেরে শিমুকে হত্যা করেন নোবেল। আর লাশ গুম করতে তাকে সহায়তা করেন বন্ধু ফরহাদ।

২৩ জানুয়ারি হারুনের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কেরানীগঞ্জ থানার পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম গত বছর ২৯ আগস্ট নোবেল ও ফরহাদকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। পরে ২৯ নভেম্বর দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।

প্রসঙ্গত, কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘বর্তমান’ সিনেমা দিয়ে ১৯৯৮ সালে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে শিমুর। পরের বছরগুলোয় দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, চাষি নজরুল ইসলাম, শরিফ উদ্দিন খান দিপুসহ আরও বেশ কিছু পরিচালকের প্রায় ২৫ সিনেমায় পার্শ্বচরিত্রে দেখা যায় তাকে। শাকিব খান, অমিত হাসানসহ কয়েকজন তারকার সঙ্গেও কাজ করেছেন। শিমু বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সহযোগী সদস্য ছিলেন। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি কয়েকটি টিভি নাটকে অভিনয় এবং প্রযোজনাও করেছেন।

সর্বশেষ খবর