শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

চসিকে দুদকের অভিযান

মশক নিধনের ওষুধ কেনায় অনিয়ম

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে (চসিক) মশক নিধনের ওষুধ কেনায় অনিয়মের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল দুপুরে নগরের টাইগারপাসে চসিকের অস্থায়ী কার্যালয়ে দুদকের সমন্বিত চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-১-এর সহকারী পরিচালক এমরান হোসেনের নেতৃত্বে টানা তিন ঘণ্টা এ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে এ সংক্রান্ত নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়।

জানা যায়, সরকারি তহবিলের টাকায় ই-জিপির (ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট) মাধ্যমে কেনাকাটা করা এবং দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার নিয়ম থাকলেও ঠিকাদার অরভিন সাকিব ইভানের প্রতিষ্ঠান মেসার্স বেঙ্গল মার্ক ইন্টারন্যাশনালের কাছ থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারি ও সেপ্টেম্বর দুই দফায় ৬ হাজার ৩৫০ লিটার মশা নিধনের ওষুধ কেনা হয়। এর আগে ২০১৯ সালের অক্টোবরে কেনা হয়েছিল ৬ হাজার ৪০০ লিটার ওষুধ। এসব ওষুধের জন্য সিটি করপোরেশনের ব্যয় হয় ৭৪ লাখ ৬১ হাজার টাকা।

২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে নিরীক্ষা অধিদফতরের প্রতিবেদনে বলা হয়, উন্মুক্ত দরপত্র ছাড়া ওষুধ কেনা আর্থিক ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলার পরিপন্থী। পিপিআরের এই ধারা ব্যবহার করে কেনাকাটা বা কার্যাদেশ না দিতে বিভিন্ন সময়ে লিখিত নির্দেশনা দেয় চসিক। তবে পরিচ্ছন্নতা বিভাগ সেই নির্দেশনা না মেনে দরপত্র ছাড়াই ওষুধ কেনার অভিযোগ উঠেছে।

দুদকের সহকারী পরিচালক এমরান হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, চসিকে মশার ওষুধ কেনায় দুর্নীতির একটা অভিযোগ ছিল। ২০১৮ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত একটা নির্দিষ্ট ঠিকাদারকে বারবার কার্যাদেশ দেওয়া হচ্ছে। মেসার্স বেঙ্গল মার্ক ইন্টারন্যাশনাল নামের ওই প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ডিসেম্বর ২১ থেকে অক্টোবর ২২ পর্যন্ত ৭৭ লাখ ৩৭ হাজার ৩০০ টাকার ওষুধ কেনা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী ৫ লাখ টাকার বেশি কেনাকাটা করতে হলে দরপত্র আহ্বান করতে হয়। কিন্তু একই ব্যক্তিকে কাজ পাইয়ে দিতে ৫ লাখ টাকার নিচে রাখতে ১৬ লটে ভাগ করে ওষুধ কেনা হয়েছে। আমরা কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে প্রাথমিকভাবে অনিয়মের সত্যতা পেয়েছি। বাকিটা তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দুদক প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে। কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ আবুল হাশেম বলেন, আমি দায়িত্ব গ্রহণ করি গত বছরের আগস্টে। ওষুধ কেনার অভিযোগটি তার আগের ঘটনা। তবে দায়িত্ব নেওয়ার পর কাগজপত্র ঘাটতে গিয়ে বিষয়টি খেয়াল করি। গত সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধির পর জরুরি ভিত্তিতে প্রায় ২০ লাখ টাকার ওষুধ কেনা হয়েছিল। জরুরি ভিত্তিতে এক বছরের প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনতে ক্রয়পরিকল্পনা করা হয়। এরপর দরপত্রের মাধ্যমেই তা কেনা হচ্ছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর