বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

রুশ যুদ্ধবিমানের সঙ্গে সংঘর্ষে মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত, উত্তেজনা

প্রতিদিন ডেস্ক

রাশিয়ার যুদ্ধবিমান গত মঙ্গলবার সকালে কৃষ্ণসাগরে গোয়েন্দাবৃত্তির সময় একটি মার্কিন ড্রোনকে সাগরে ফেলে দিয়েছে। এ ঘটনায় রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনা তীব্র হয়ে উঠেছে। সূত্র : রয়টার্স, আল জাজিরা    মার্কিন সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, দুটি রাশিয়ান এসইউ-২৭ জেট বিমান আন্তর্জাতিক আকাশে উড়ার সময় সকাল ৭টা ৩ মিনিটে আমেরিকান ড্রোনটিকে বেপরোয়াভাবে বাধা দেয়। বিমান দুটি এমকিউ-৯ রিপার ড্রোনকে বিপজ্জনকভাবে আঘাত করে এবং ড্রোনের ওপর জ্বালানি তেল ঢেলে দেয়। একপর্যায়ে ড্রোনটি বিধ্বস্ত হয়। আমেরিকা আরও দাবি করছে, ড্রোনটি শান্তিপূর্ণভাবে কৃষ্ণসাগরের আন্তর্জাতিক সীমানায় গোয়েন্দা মিশন পরিচালনা করছিল। অন্যদিকে রুশ যুদ্ধবিমানের সঙ্গে মার্কিন ড্রোনের সংঘর্ষের বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেছে ক্রেমলিন। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাশিয়ার বিমান ড্রোনটির সংস্পর্শে আসেনি বা অস্ত্র ব্যবহার করেনি।

এ বিষয়ে ওইদিনই ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে রুশ রাষ্ট্রদূত আনাতলি অ্যান্তোনভ ‘আমেরিকার এমকিউ-৯ ড্রোন কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র এবং বোমা বহন করতে সক্ষম’ উল্লেখ করে বলেন, রাশিয়ার ভূখণ্ডের কাছে আমেরিকার ড্রোনের কাজ কি? কৃষ্ণসাগরের আকাশে আমেরিকার ড্রোনের উপস্থিতি হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে চলমান পরিস্থিতিতে উসকানি সৃষ্টি। খবরে বলা হয়, মঙ্গলবার কৃষ্ণসাগরের আকাশ থেকে মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করার ঘটনায় রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতকে তলব করে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। রুশ রাষ্ট্রদূত সাক্ষাৎকার করেন ইউরোপ ও ইউরেশিয়াবিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী কারেন ডনফ্রাইডের সঙ্গে। মার্কিন এ সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড্রোন ভূপাতিত করার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, রাশিয়া এ ক্ষেত্রে খুবই অনিরাপদ এবং অপেশাদার কাজ করেছে। পাশাপাশি বৈঠক থেকে বেরিয়ে রুশ রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমরা মনে করি এই ঘটনা উসকানিমূলক। আমি ডনফ্রাইডকে বলেছি, রাশিয়ার সীমান্তের কাছে আমেরিকার ড্রোন, বিমান এবং জাহাজের উপস্থিতির কোনো প্রয়োজন নেই।’ তিনি সাংবাদিকদের আরও বলেন, ‘নিউইয়র্ক কিংবা স্যান ফ্রান্সিকোর কাছে যদি রাশিয়ার কোনো ড্রোন এভাবে আসতো তাহলে পেন্টাগন এবং মার্কিন গণমাধ্যমের প্রতিক্রিয়া কী হতো- তা কি আপনারা কল্পনা করতে পারেন?’ অ্যান্তোনভ বলেন, ডনফ্রাইডের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে এবং দুইপক্ষই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। পূর্ব ইউরোপের বর্তমান পরিস্থিতিতে রাশিয়া ও আমেরিকা দুই দেশকেই সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। তিনি ডনফ্রাইডকে আরও বলেন, মস্কো ওয়াশিংটনের সঙ্গে চমৎকার সম্পর্ক চায়, সংঘাত চায় না। খবরে বলা হয়, এক বছর আগে রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের পর প্রথমবারের মতো সরাসরি সংঘর্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আনলো দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। এদিকে গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে- আমেরিকা যদিও বারবার দাবি করছে, তারা চলমান রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের কোনো পক্ষ নয় কিন্তু গত এক বছর ধরে তারা রাশিয়ার ভূখণ্ডের কাছে ড্রোন এবং গোয়েন্দা বিমানের সাহায্যে গুপ্তচরবৃত্তি চালিয়ে আসছে এবং তারা রাশিয়ার অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তু সম্পর্কে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীকে তথ্য সরবরাহ করছে।

সর্বশেষ খবর