রবিবার, ২১ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
রাতদিন প্রচারণায় প্রার্থীরা

আনোয়ারের প্রচারে কেন্দ্রীয় নেতারা

সিলেট

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

আনোয়ারের প্রচারে কেন্দ্রীয় নেতারা

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। আনোয়ারের পক্ষে দলীয় নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করার টার্গেটেই তাঁরা কাজ করছেন সিলেটে। আরিফবিহীন নির্বাচনে দলের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রাখাই মূল চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন তাঁরা। ফলে সিলেটে এসে তাঁরা দলীয় নেতা-কর্মী ও সেন্টার কমিটির দায়িত্বশীলদের সঙ্গে দফায় দফায় সভা করছেন। অন্যদিকে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়ে প্রার্থী না হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বর্তমান মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী। এ ছাড়া প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মাহমুদুল হাসান। আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর পক্ষে প্রচারণা চালাতে শুক্রবার সিলেট আসেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও সৈয়দা জেবুন্নেসা হক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন। দুই দিনের প্রচারণা শেষে আজ রবিবার সকালে তাঁদের ঢাকায় ফিরে যাওয়ার কথা। গত দুই দিন কেন্দ্রীয় নেতারা সিলেটে এসে দফায় দফায় দলীয় নেতা-কর্মী ও নির্বাচন কেন্দ্র করে গঠিত সেন্টার কমিটিগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সিলেট নগরীকে পাঁচটি অঞ্চলে ভাগ করে এ প্রচারণা চালানো হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় সিলেট নগরীতে বসবাসরত সুনামগঞ্জ-১ আসনের নাগরিকদের নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। নগরীর রিকাবিবাজারে কবি নজরুল অডিটরিয়ামে আয়োজিত ওই সভায় তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে আনোয়ারুজ্জামানের পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানান। রাত ৮টায় দক্ষিণ সুরমার একটি কমিউনিটি সেন্টারে দক্ষিণাঞ্চলের সেন্টার কমিটির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন নানক। সেখানে তিনি বলেন, গত ১০ বছর সিলেটের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকার দুই হাতে বরাদ্দ দিলেও সেই টাকার সদ্ব্যবহার হয়নি, যে কারণে সিলেটবাসীর দুঃখদুর্দশা লাঘব হয়নি। এবার নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করে কাক্সিক্ষত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় নগরীর মির্জাজাঙ্গালে একটি হোটেলে আনোয়ারুজ্জামানের সমর্থনে মধ্যাঞ্চলের সেন্টার কমিটির নেতাদের নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা মতবিনিময় করেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেসা হক। সভায় তিনি বলেন, দুবার এ সিটিতে নৌকা পরাজিত হয়েছে। এ পরাজয় নিয়ে নেতা-কর্মীদের হৃদয়ে এখনো রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আগামী নির্বাচনে এর পুনরাবৃত্তি ঘটতে দেওয়া যাবে না। আনোয়ারুজ্জামানকে বিজয়ী করে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়রের চেয়ার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে হবে।

এদিকে গতকাল বেলা ১১টায় নগরীর মির্জাজাঙ্গালে একটি হোটেলে পশ্চিমাঞ্চলের সেন্টার কমিটি ও সন্ধ্যা ৭টায় খাদিমপাড়ায় একটি কমিউনিটি সেন্টারে পূর্বাঞ্চলের নেতাদের নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা দুটিতে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। সেখানে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বরাবরই নির্বাচনমুখী গণতান্ত্রিক দল। দলের নেতা-কর্মীরা নির্বাচন নিয়ে আগ্রহী। কারণ আমরা জানি ক্ষমতার পট পরিবর্তনের উত্তম উপায় হচ্ছে নির্বাচন। যারা অগণতান্ত্রিক তাদের নির্বাচনে আগ্রহ থাকে না। কেউ কেউ আত্মমর্যাদা হারানোর ভয়েও নির্বাচনে দাঁড়াতে চান না। আবার কারও কারও ইচ্ছা থাকলেও তথাকথিত নেতাদের রক্তচক্ষুর ভয়ে সরকারের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। এটাই হচ্ছে অগণতান্ত্রিক মানসিকতা। দেশের মানুষ এদের অনেক আগেই প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের কোনো জনসমর্থন নেই। কেউ নির্বাচনে এলো কি না তাতে আওয়ামী লীগের কিছু যায়-আসে না।’

সরে দাঁড়ালেন আরিফ : অবশেষে নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়ার ঘোষণা দিলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। গতকাল বিকালে তিনি নগরীর রেজিস্টারি মাঠে ‘নাগরিক জনসভা’ করে নির্বাচন না করার ঘোষণা দেন। নির্বাচনী পরিবেশ না থাকা, ইভিএম নিয়ে শঙ্কা এবং দলীয় সিদ্ধান্ত বিবেচনা করে তিনি প্রার্থী না হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে নগরবাসীকেও এ নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

প্রচারণায় বাবুল ও মাহমুদুল : প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মাহমুদুল হাসান। শুক্রবার রাতে নগরীর লালদীঘরপাড়ে ১৪ নম্বর ওয়ার্ড জাতীয় পার্টির উদ্যোগে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বাবুল বলেন, গত ১০ বছর উন্নয়নের নামে অপরিকল্পিত কর্মকান্ড হয়েছে, যে কারণে জনদুর্ভোগ আরও বেড়েছে। একটি পরিকল্পিত নগরী গড়তে হলে জাতীয় পার্টির মেয়রের বিকল্প নেই। আগামী নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হলে মাস্টারপ্ল্যানের আওতায় একটি নান্দনিক নগরী গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। এদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী মাওলানা মাহমুদুল হাসান গতকাল সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত নগরীর ৬ নম্বর ওয়ার্ডে এবং বিকাল ৫টা থেকে ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন।

সর্বশেষ খবর