বুধবার, ২৪ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
সিলেট সিটি নির্বাচন

শোডাউন করে জমা মনোনয়নপত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

অন্যান্য প্রার্থী সর্বোচ্চ পাঁচজন কর্মী-সমর্থক সঙ্গে নিয়ে এলেও শোডাউন করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিন গতকাল তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে শোডাউন করে সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান। পরে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেন। দুপুরে মনোনয়নপত্র জমা দিতে রিটার্নিং কমকর্তার কার্যালয়ে যান আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন শতাধিক নেতা-কর্মী। আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রবেশের সময় তার সঙ্গে দলীয় নেতা-কর্মীরাও প্রবেশ করেন। এরপর তিনি প্রায় অর্ধশত নেতা-কর্মী সঙ্গে নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন- আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেসা হক, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, মহানগরের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সুব্রত পুরকায়স্থ প্রমুখ।

শোডাউন করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, তিনি জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়েছেন। এ সময় অন্য যারা উপস্থিত ছিলেন তারা বিভিন্ন কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে সেখানে গিয়েছিলেন।

এ প্রসঙ্গে রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদির বলেন, ‘আমরা পাঁচজনের অধিক মানুষ নিয়ে মনোনয়ন জমা না দেওয়ার জন্য প্রার্থীদের বলেছি। আওয়ামী লীগের প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমাদানকালে বেশ কিছু কাউন্সিলর প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকরা উপ?স্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে তাদের অবহিত করলে তারা সরে যান।’

এদিকে, একই দিন মনোনয়নপত্র জমা দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মাহমুদুল হাসানসহ কয়েকজন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী। তাদের নির্বাচন অফিসে প্রবেশের সময় সর্বোচ্চ পাঁচজনকে সঙ্গে নিয়ে যেতে বলা হয়। পাঁচজনের অধিক লোক নিয়ে কাউকেই ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন গতকাল মেয়র পদে ১১ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ডে ২৮৭ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৮৯ জন কাউন্সিলর প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর আগে গত ২৭ এপ্রিল থেকে সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ শুরু করেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। ২৭ দিনে মেয়র পদে ১১ জন এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৪৫৬ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। শেষদিন পর্যন্ত ৮০ জন কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেননি। সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের মিডিয়া সেল (সিটি নির্বাচন) কর্মকর্তা সৈয়দ কামাল হোসেন জানান, মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন ১১ জন। এর মধ্যে দলীয় প্রতীকের প্রার্থী ৪ জন। তারা হলেন- মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী (আওয়ামী লীগ), নজরুল ইসলাম বাবুল (জাতীয় পার্টি), হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান (ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ) ও মো. জহিরুল আলম (জাকের পার্টি)। এর মধ্যে জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুল গত সোমবার এবং বাকিরা গতকাল মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।

এছাড়া মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন- মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু, মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান খান, সামছুন নুর তালুকদার, মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন, মাওলানা জাহিদ উদ্দিন চৌধুরী, মো. শাহজাহান মিয়া ও মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা।

উল্লেখ্য, আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন ইভিএমে হবে। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২৫ মে, প্রত্যাহারের শেষ সময় ১ জুন।

 সিলেট সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০২ সালে। ৭৯ দশমিক ৫০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই নগরে ওয়ার্ড আছে ৪২টি। ভোটার ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৬০৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫৩ হাজার ৭৬৩ জন এবং নারী ২ লাখ ৩২ হাজার ৮৪২ জন। মোট কেন্দ্র ১৯০টি এবং ভোটকক্ষ ১ হাজার ৩৬৪টি।

সর্বশেষ খবর