সোমবার, ৫ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা
সরগরম সিটি নির্বাচনের মাঠ

নগরজুড়ে শুধুই নৌকার পোস্টার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

নগরজুড়ে শুধুই নৌকার পোস্টার

রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ হয়েছে শুক্রবার। এই সময়ের আগেই আওয়ামী লীগ সমর্থিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের পোস্টার সাঁটানো হয়েছিল। শনিবার সন্ধ্যার মধ্যেই পুরো নগরী ছেঁয়ে যায় নৌকার প্রার্থীর পোস্টারে।

নৌকা প্রার্থীর পোস্টারের বিপরীতে অন্য তিন মেয়র প্রার্থী বলতে গেলে প্রচারই শুরু করেননি। তাদের কোনো ধরনের পোস্টার চোখে পড়েনি। ওই তিন প্রার্থী বলছেন, প্রথম দিন যে পরিমাণ পোস্টার লাগিয়েছেন একজন প্রার্থী, তাতে তাদের পোস্টার দৃশ্যমান করতে গেলে দ্বিগুণ পোস্টার লাগাতে হবে। তবে তারা ধীরে ধীরে প্রচার বাড়াবেন। পোস্টারের খরচের ক্ষেত্রেও মিতব্যয়ী থাকবেন তারা। প্রতীক বরাদ্দের আগে নৌকা সমর্থিত প্রার্থীর পোস্টার সাঁটানো নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুরশিদ আলম ফারুকী। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের পরিবেশ ভালো আছে। তবে প্রতীক বরাদ্দের আগেই পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। এটা আমরা রিটার্নিং কর্মকর্তাকে মৌখিকভাবে বলেছি।’ রাজশাহী নগরীর কয়েকটি ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, শহরের সব রাস্তা, স্থাপনা, বিদ্যুতের খুঁটি, লাইটের খুঁটিতে ঝুলছে নৌকা প্রার্থীর পোস্টার। এ ছাড়া সড়ক বিভাজন, বিভিন্ন গোল চত্বরেও পোস্টারের ছড়াছড়ি। কোথাও কোথাও দড়িতে বেঁধে পোস্টারগুলো ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় পোস্টার এক পাশে দড়ি ছিঁড়ে পড়েও গেছে। পোস্টারের মতো মাইকিংয়েও এগিয়ে আছেন নৌকার প্রার্থী। দলটির রাজশাহী মহানগরীর ৩৭টি সাংগঠনিক কমিটি কাজ করছে। এ ছাড়া প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই ৩০টি ওয়ার্ডে মাইকে প্রচার করা হচ্ছে। অন্যদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় পার্টি ও জাকের পার্টির প্রার্থীও এখনো পোস্টার লাগাননি। এর মধ্যে ইসলামী আন্দোলন ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী মাইকে প্রচারণা চালালেও জাকের পার্টির প্রার্থীর প্রচারণা চোখে পড়েনি। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী মুরশিদ আলম ফারুকী বলেন, পোস্টার ছাপাতে দেওয়া হয়েছে, ছাপা হলেই চলে আসবে। হাতপাখার পোস্টার যতটুকু সম্ভব লাগাবেন তারা। একটা পোস্টারে খরচও অনেক পড়ে। তারা বিকল্প প্রচারণার চেষ্টা চালাচ্ছেন। প্রচার ডিজিটাল পদ্ধতিতে করবেন। জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন বলেন, ‘দেখলাম যে একজন প্রার্থীর পোস্টারে রাজশাহী ছেয়ে গেছে। ওর মধ্যে আমাদেরটা তো গুণেই পাওয়া যাবে না। আমাদের টার্গেট হচ্ছে, খরচ যত কমিয়ে পোস্টার করা যায়। কারণ, মানুষ জানে কোন কোন প্রার্থী দাঁড়িয়েছেন।’ জাকের পার্টির প্রার্থী লতিফ আনোয়ার বলেন, প্রচার-প্রচারণা চলছে। তবে এখনো মাইকিং করা হয়নি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই গণসংযোগ জোরেশোরে করা হবে। ধীরে ধীরে প্রচার-প্রচারণা বাড়াবেন তিনি। আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আচরণবিধির বাইরে তারা কোনো প্রচারণা করছেন না। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ওয়ার্ডে সাংগঠনিক কমিটি আছে। তারা পোস্টার লাগানোর কাজ করছেন। তাই আওয়ামী লীগের প্রচারণা দৃশ্যমান। অন্যরা প্রচারণা না করে বা পোস্টার না টানিয়ে অভিযোগ করলে তো হবে না।’ এ সময় লিটন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রচারণায় ধর্মকে ব্যবহারের অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, ভোটারদের মন পেতে দলটি ধর্মকে ব্যবহার করছে। ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী গতকাল প্রচারণায় নেমে জবাব দিয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর অভিযোগের। ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুরশিদ আলম ফারুকী বলেন, ‘ভোট তো ধর্মের নামে হওয়ার কথা। আমাদের পোশাক, অবস্থান সবসময় একই। কিন্তু যারা ভোট এলে এমন অভিযোগ করেন, তারা ভোটের সময় নিজেদের বেশভূষা বদলে ফেলেন।’

সর্বশেষ খবর