‘বাঘ করি সংরক্ষণ সমৃদ্ধ হবে সুন্দরবন’- স্লোগান সামনে রেখে আজ ২৯ জুলাই পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব বাঘ দিবস-২০২৩’। বাঘ রয়েছে বিশ্বের এমন ১৩টি দেশ একযোগে দিবসটি পালন করবে। এ উপলক্ষে সুন্দরবনের চারটি রেঞ্জে খুলনা, সাতক্ষীরা, চাঁদপাই ও শরণখোলায় আলাদাভাবে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে সমাবেশ, শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া ঢাকায় বাঘ দিবসের অনুষ্ঠানে বন বিভাগ আনুষ্ঠানিকভাবে সুন্দরবনে হরিণ ও শূকরের সংখ্যা প্রকাশ করবে।
জানা যায়, ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ের মাধ্যমে সুন্দরবনে বাঘ (রয়েল বেঙ্গল টাইগার) গণনা কাজ চলছে। এর মধ্যে ৩০ এপ্রিল খুলনা ও সাতক্ষীরা রেঞ্জে বাঘ গণনায় ক্যামেরা ট্র্যাপিং শেষ হয়েছে। এখানকার প্রাপ্ত সব ছবি বিশ্লেষণের জন্য ঢাকায় রিসোর্স সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে চাঁদপাই ও শরণখোলা রেঞ্জে ক্যামেরা ট্র্যাপিং কাজ শুরু হবে। বাঘ গণনার ফল জানা যাবে ২০২৪ সালের জুন-জুলাইয়ে। এদিকে সুন্দরবনে বাঘের নিরাপদ বিচরণ ক্ষেত্র বেড়েছে। সেই সঙ্গে বাঘের সংখ্যাও বেড়েছে বলে গণনা কাজে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। ২০১৫ ও ২০১৮ সালের ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ে খুলনা রেঞ্জে বাঘের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি বললেই চলে। কিন্তু এবার সেখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাঘের অস্তিত্ব মিলেছে। কোনো স্থানে বড় বাঘের সঙ্গে বাচ্চার ছবিও ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প পরিচালক ও সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, ২০১৮ সালে সুন্দরবনকে জলদস্যুমুক্ত ঘোষণার পর থেকেই বনের চেহারাটা বদলেছে। এখন সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখা যায় টুরিস্টরা ৩-৪টা বাঘ একসঙ্গে দেখতে পাচ্ছেন। প্রায়ই তারা বাঘের ছবি ভিডিও পোস্ট করছেন। আগে কটকা কচিখালিকে গেলে এসব চিত্র কল্পনাও করা যেত না। শরণখোলা চান্দেশ্বর পুকুরের পাড়ে বনকর্মীরা চারপাশে বাঘের ঘোরাঘুরিতে তিনদিন পর্যন্ত বাইরে বের হতে পারেনি। এসব ইনডেকটর বলছে, বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, আগে ২৩ শতাংশ সংরক্ষিত বন ছিল। এখন ৫২ শতাংশ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রজনন মৌসুমের তিন মাস জুন জুলাই আগস্ট বনে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফলে সার্বিক স্থিতাবস্থায় বাঘের নিরাপদ বিচরণ বেড়েছে।
কর্মকর্তারা জানান, ২০১৮ সালে ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ে ২৪০০-এর মতো বাঘের ছবি পাওয়া যায়। সেখান থেকে অ্যানালাইসিস করে ১১৪টি বাঘের ইউনিক ছবি পাওয়া যায়। বাঘের গায়ের ডোরাকাটা দাগের মিল করে প্রতিটি বাঘকে আলাদা করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে সুন্দরবনে বাঘ পাওয়া গিয়েছিল ১০৬টি। দ্বিতীয়বার ২০১৮ পাওয়া যায় ১১৪টি।