বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবদুল কাদের বলেছেন, এ প্রজন্ম ছাত্র রাজনীতি বলতে সন্ত্রাসী কার্যক্রম, দখলদারি, হলগুলোয় ছাত্রদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন, ক্ষমতাসীন দলের এজেন্ডা সার্ভ করা, নেতাদের প্রটোকল ইত্যাদি দেওয়া মনে করে। তারা এ দৃশ্য দেখেই বড় হয়েছে। শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কোনো দিন ছাত্র সংগঠনকে কাজ করতে আমরা দেখিনি। ছাত্রছাত্রীরা এসব সংগঠনের কারণে নিজেদের দাসত্বের জীবন দেখে এসেছে। সে জায়গা থেকে সবাই পরিবর্তন চায়। নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য নতুনভাবে ক্যাম্পাসভিত্তিক রাজনীতি হতে হবে। ছাত্র রাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে থাকবে। কিন্তু হলভিত্তিক কোনো রাজনীতি থাকবে না। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। কোটা সংস্কার ও সরকার পতন আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া অন্যতম এ সমন্বয়ক বলেন, ছাত্র রাজনীতির ভয়াল, আগ্রাসি রূপ দেখে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ চাইছেন ক্যাম্পাসে। নতুন ধারার রাজনীতি যদি চালু করা যায়, শিক্ষার্থীদের কল্যাণে যদি কাজ করা যায় তবে এ ধারণার পরিবর্তন হবে। এ ছাড়া ছাত্র সংসদগুলো কার্যকর করা গেলে ছাত্র রাজনীতির বিষয়টি গৌণ হয়ে যাবে। কারণ সেখানে শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক চর্চার পরিবেশ ফিরে আসবে।
তিনি বলেন, অনেকে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের কথা বলছেন। কিন্তু আমরা মনে করি রাজনীতি করা কিংবা সংগঠন করা একজন ব্যক্তির সাংবিধানিক অধিকার। কেউ চাইলেই এ অধিকার ক্ষুণœ করতে পারবে না। তবে ক্যাম্পাসের হলগুলোয় কোনো লেজুড়বৃত্তি, দখলদারি, নিপীড়ন-নির্যাতন, গেস্টরুম কালচার করতে দেওয়া হবে না। তাই আবাসিক হলগুলোয় ছাত্র সংগঠনের কোনো কমিটি থাকবে না। তবে যদি কেউ রাজনীতি করেন তিনিও হলে থাকতে পারবেন। এটি একজন শিক্ষার্থীর অধিকার।
এ সমন্বয়ক বলেন, ক্যাম্পাসের এমন রাজনীতির জন্য গঠনমূলক পরিবর্তন হতে হবে। এটি নিয়ে আমরা এরই মধ্যে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলেছি। বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের (ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবক) সমন্বয়ে একটি কমিশন গঠন করতে হবে যে, কীভাবে এ গঠনমূলক পরিবর্তন আনা যায়। শিক্ষার্থীদের হলে থাকতে হলে কিছু নিয়মকানুন বেঁধে দেওয়া হবে। এসব পদ্ধতিতে হলগুলোয় দখলদারি ও লেজুড়বৃত্তির রাজনীতি বন্ধ করা হবে। তিনি বলেন, এ উদ্যোগ নিয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন ছাত্রনেতার সঙ্গেও কথা বলেছি। তাদের সবাই রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন চান।
আবদুল কাদের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে মাত্র। এটি নিয়ে গুজব ছড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, ফের যদি কোনো ছাত্র সংগঠন তার ধ্বংসাত্মক রূপ দেখানোর চেষ্টা করে তবে তারা আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।