চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হারের লক্ষ্যমাত্রা ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ নামিয়ে আনছে অন্তর্বর্তী সরকার। চলতি অর্থবছরের জিডিপির প্রবৃদ্ধির হারের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী তার প্রথম বাজেটে এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিলেন।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে গতকাল ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত আর্থিক, মুদ্রা ও বিনিময় হার-সংক্রান্ত সমন্বয় কাউন্সিলের কমিটির বৈঠকে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা কমানোর সিদ্ধান্ত হয়। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বৈঠকে পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, অর্থ সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, বাণিজ্য সচিব মোহাং সেলিমউদ্দিনসহ আরও সচিব ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মচারীরা অংশ নেন। বৈঠক শেষে জানতে চাইলেও অর্থ উপদেষ্টা বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে সাংবাদিকদের কাছে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের মূল্যস্ফীতির হারও সংশোধন করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে সার্বিক মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। সালেহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, চলতি অর্থবছরের সার্বিক মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ৯ শতাংশের নিচে রাখা হবে। গত অক্টোবরে মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
বাজেট কাঁটছাট এবার অন্যবারের তুলনায় কম হবে। বৈঠকে উপস্থিত অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সমকালকে বলেন, বর্তমানে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা ফেরানোয় গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। তাই বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বাজেটে বড় ধরনের কাটছাঁট করার পরিকল্পনা থাকলেও গ্যাস, বিদ্যুৎ ও সারে বকেয়া ভর্তুকি বাবদ প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা পরিশোধের বাধ্যবাধকতা থাকায় সেটি করা যাচ্ছে না। আবার সম্প্রতিক সময়ে গণ অভ্যুত্থানে বেশ কিছু ক্ষতির পাশাপাশি বন্যাসহ নানান প্রকৃতিক দুর্যোগে সরকারের ব্যয় বেড়েছে। তাই চলতি বাজেট সংশোধন করে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা কমানো হচ্ছে। এবার মোট ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট দেয় ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার।