শীত ঋতুর আনুষ্ঠানিকতা এখনো শুরু হয়নি। এরই মধ্যে পরিযায়ী পাখির আনাগোনায় মুখর হয়ে উঠেছে তিস্তা নদীর চর এলাকাগুলো। শীতে পরিযায়ী পাখির সৌন্দর্য উপভোগ করতে দর্শনার্থীর ভিড় বাড়ছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে শৌখিন আলোকচিত্রীদের পদচারণ। নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্ট থেকে রংপুরের কাউনিয়া পর্যন্ত প্রায় ৬৫ কিলোমিটার তিস্তা নদী এবং নদীর চরে এখন বিচরণ করছে অসংখ্য পরিযায়ী পাখি। এর কোনো কোনোটা হাজার মাইল দূর থেকে এসেছে।
জানা গেছে, প্রতি বছর ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিস্তা পরিযায়ী পাখির কলতানে মুখর হয়ে ওঠে। এবারও পাখি আসছে। এবার বেশ কিছু নতুন পরিযায়ী পাখির দেখা পাওয়া গেছে তিস্তায়। নদীর পরিবেশ-প্রকৃতি অনুকূলে থাকায় তিস্তাকে নিরাপদ আশ্রয়স্থল মনে করছে এ পাখিগুলো। নদীতে শামুক, জলজ পোকামাকড় তাদের খাদ্য। তিস্তায় এসব খাদ্য পাওয়া যায় বলে এখানে বিচরণ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে পাখিগুলো। তিস্তাকে যেন পাখির নির্ভয় বিচরণ ক্ষেত্রে পরিণত করা যায় এজন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বশীলদের এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। সুদূর সাইবেরিয়া, মধ্য এশিয়া, দক্ষিণ চীন, লাদাখ থেকে এসব পাখি আসছে। এর মধ্যে বিভিন্ন প্রজাতির দুর্লভ হাঁস, ছোট কান প্যাঁচা, লম্বা পা তিসাবাজ, জিরিয়া, টিটি, মনকান্ড, চখাচখিসহ ৫০ থেকে ৫৫ প্রজাতির পাখির দেখা মেলে তিস্তায়। ২ ডিসেম্বর ছবি ও পাখির খোঁজে দিনভর তিস্তার বুকে ছিলেন শৌখিন আলোকচিত্রী কবি ও লেখক রানা মাসুদ, ফটোসাংবাদিক রঞ্জিত দাস, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবী আলহাজ আলমগীর হোসেন, রংপুর চেম্বারের পরিচালক হাসান মাহবুব আখতার লোটনসহ কয়েকজন। তাঁদের ক্যামেরায় উঠে আসে তিস্তার কিছু পরিযায়ী পাখির বিচরণের চিত্র। আলোকচিত্রী রানা মাসুদ বলেন, ‘প্রতি বছরই দুর্লভ পাখি দেখতে এবং ছবি তুলতে তিস্তাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাই। এবার তিস্তায় গত বছরের চেয়ে বেশি পাখির আগমন ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে।’