সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৭ হাজার ৭০৯ জন শিক্ষক নিয়োগ দিতে যাচ্ছে সরকার। এর মধ্যে ১৫ হাজার ৩২৭টি সহকারী শিক্ষকের শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়া আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার উদ্যোগ নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি ২ হাজার ৩৮২টি প্রধান শিক্ষক পদে সরাসরি নিয়োগ দেবে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এজন্য বিদ্যমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০১৯ সংশোধনের খসড়া পিএসসিতে পাঠানো হয় এবং তাদের সুপারিশ পাওয়া গেছে। বর্তমানে খসড়াটি আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ বিভাগে ভেটিংয়ের জন্য রয়েছে। ভেটিং সম্পন্ন হলে এক মাসের মধ্যেই সহকারী শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে বলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে দেশে ১০ হাজার ১৬১টি সহকারী শিক্ষক এবং ৫ হাজার ১৬৬টি সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। চলতি বছরের ১৪ জুলাই প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এক সভায় জানানো হয়, দেশে বর্তমানে ৩৪ হাজার ১০৬টি প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। বিদ্যমান নীতিমালায় ৬৫ শতাংশ পদোন্নতি ও ৩৫ শতাংশ সরাসরি নিয়োগের বিধান থাকলেও প্রস্তাবিত সংশোধনে ৮০ অনুপাত ২০ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বিসিএস (নন-ক্যাডার) পদ্ধতিতে নিয়োগ দিতে গিয়ে দীর্ঘসূত্রতা তৈরি হয়, তাই পিএসসি প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য আলাদা পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে। পাশাপাশি পদোন্নতির মাধ্যমে শূন্য পদ পূরণেও গতি আনা হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক না থাকায় অনেক অভিভাবক সন্তানদের মাদরাসায় পাঠান। ফলে সরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি কমে যায়। এ কারণে প্রাথমিক স্তরেই ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শৈশবে নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষা যেমন প্রয়োজন, তেমন এর মাধ্যমে বিদ্যালয়ে ভর্তি বাড়ানোও সম্ভব। যদি ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া যায়, তাহলে শুরু থেকেই শিশুরা বিদ্যালয়ে আসবে। জানা গেছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে শিক্ষার মানের ভিত্তিতে শ্রেণিবিন্যাস করা হবে এবং পিছিয়ে থাকা বিদ্যালয়ের মানোন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ ছাড়া বিদ্যমান বদলি নীতিমালার সীমাবদ্ধতা চিহ্নিত করে সেটি আরও শৃঙ্খলাবদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। বর্তমানে গ্রামীণ বিদ্যালয়ে শিক্ষকসংকট থাকলেও ঢাকা ও বিভাগীয় শহরে অতিরিক্ত শিক্ষক রয়েছে। এজন্য উপজেলার বাইরে বদলির ক্ষেত্রে কঠোর নীতিমালা প্রয়োগের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।