আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু করার জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে এক্স-ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশন। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত ‘নির্বাচনে সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিতকরণে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা : সম্ভাবনা ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এ দাবি করা হয়।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, নিরাপদ ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে সশস্ত্র বাহিনীর সক্রিয় ও নিরপেক্ষ ভূমিকা অত্যাবশ্যক। সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ও পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতাসহ সমন্বিত নিরাপত্তাব্যবস্থার মাধ্যমে নির্বাচনে ভোট কারচুপি ও সহিংসতা প্রতিরোধ সম্ভব। সরকার এসব প্রস্তুতি নিলে নির্বাচন নিয়ে জনগণের আস্থা বাড়বে। ভোট সুষ্ঠু হবে। দেশ স্থিতিশীল থাকবে।
অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাইফুল্লাহ খান সাইফের সভাপতিত্বে সেমিনারে অতিথি ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) রোকন উদ্দীন, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, আমজনতা পার্টির সদস্য সচিব ফাতেমা তাসনিম এবং সবুজ আন্দোলনের সভাপতি বাপ্পী সরকারসহ অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা। সেমিনারটির সঞ্চালনা করেন অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি মুশফিকুর রহমান। মো. রোকন উদ্দিন বলেন, অতীতের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, ভোট কারচুপি ও সহিংসতায় দলীয় প্রশাসনই মূল ভূমিকা রাখে। তাই সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে পূর্ণ ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে মাঠে নামানো জরুরি। এ ছাড়া দেশে এখনো বিপুল অবৈধ অস্ত্র ছড়িয়ে আছে, যা উদ্ধার না হলে নির্বাচনের আগে সহিংসতা বাড়বে। দীর্ঘদিন মাঠে থাকার ফলে সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ, পারিবারিক জীবন ও মনোবল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই তাদের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ ও স্পষ্ট হওয়া উচিত। সেনাবাহিনী জনগণের আস্থা ও দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। বিদেশি প্রভাব ও ভুয়া প্রচারণা জনগণ-সেনাবাহিনীর সম্পর্ক দুর্বল করতে চায়। রাশেদ খান বলেন, নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও অবাধ করতে সেনাবাহিনীর সক্রিয় ভূমিকা অত্যন্ত জরুরি।
সরকার নির্বাচনি পরিবেশ তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে জনগণের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ বাড়ছে। আদৌ নির্বাচন হবে কি না- সে প্রশ্নও জনগণের মনে তৈরি হচ্ছে। তাই সেনাবাহিনীসহ সব বাহিনীকে জনগণের পাশে থাকতে হবে।
তাহলে ফ্যাসিবাদমুক্ত সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে।
সেমিনারে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন লেফটেন্যান্ট (অব.) সাইফুল্লাহ খান। তিনি বলেন, অ্যাসোসিয়েশন আগামী জাতীয় নির্বাচনে স্থিতিশীলতা, স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার ন্যায়সংগত ও জিরো টলারেন্স প্রয়োগের প্রত্যাশা করে। তারা মনে করে, উপমহাদেশে সহিংসতা, পেশিশক্তি ও প্রশাসনিক পক্ষপাতমুক্ত নির্বাচনি পরিবেশেই বড় চ্যালেঞ্জ। তাই সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত রেখে পেশাদার ও নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের সুযোগ দিতে হবে।