জনপ্রিয় সবজিগুলোর মধ্যে ঢেঁড়স অন্যতম। ভাজি থেকে শুরু করে মাছের ঝোল- অনেকভাবেই খাওয়া যায় এই সবজিটি। আবার কচি ঢেঁড়স ভালো করে শুকিয়ে ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্যেও সংরক্ষণ করা যায়।
শুধু যে সুস্বাদু সবজি হিসেবেই ঢেঁড়স জনপ্রিয় তা নয়, ঢেঁড়সে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ফসফরাস এবং ভিটামিন এ, বি এবং সি। আয়োডিনের অভাবে সৃষ্ট গলগন্ড, মস্তিষ্ক ও হৃৎপিন্ডের দুর্বলতা প্রতিরোধে ঢেঁড়স খুবই উপকারী একটি সবজি। আসুন দেখে নিই ঢেঁসড়ের কিছু উপকারিতা:
কোষ্ঠকাঠিন্য দুর
ঢেঁড়সে রাইবোফ্লাভিনের পরিমাণ এতো বেশি যা বেগুন, মুলা, টমেটো আর শিমের থেকেও বেশি। কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতে ঢেঁড়স বেশ উপকারী। এজন্য বীজ ফেলে দিয়ে দু’তিনটা কাঁচা ঢেঁড়স প্রায় ৪৫০ গ্রাম পানিতে এমনভাবে সেদ্ধ করুন যাতে এক কাপ পরিমাণ অবশিষ্ট থাকে। এবার পানিটা ছেঁকে নিয়ে দুবার খাবেন একঘন্টা পর পর। এতে প্রস্রাব-পায়খানা উভয়ই পরিস্কার হবে।
ব্লাড সুগার কমায়
ঢেঁড়স ব্লাড-সুগার কমাতে সাহায্য করে। রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়তে থাকলে কালো জামের বীজ চূর্ণ করে এক গ্রাম পরিমাণ চূর্ণের সাথে তিন-চারটে কচি ঢেঁড়স সেদ্ধ পানির সঙ্গে ক’দিন খেলে ব্লাড সুগার কমে যাবে।
কাশি সারাতে
ঢেঁড়স খেলে খুসখুসে কাশি উপশম হয়। সেক্ষেত্রে বীজ ফেলে দিয়ে কয়েকটি কাঁচা ঢেঁড়স রোদে শুকিয়ে গুঁড়ো করে রাখুন। পাঁচ/ছয় গ্রাম ঢেড়সের শুকনা গুঁড়া আর চিনি দিয়ে বড়ি বানাতে হবে। বড়ি চুষে খেলে অল্প সময়ের মধ্যেই উপকার পাওয়া যাবে।
প্রোস্টেট গ্ল্যান্ডের ক্ষরণ দূর
ঢেঁড়স প্রোস্টেট গ্ল্যান্ডের ক্ষরণ দূর করতেও সহায়ক। প্রচুর পরিমাণ পানি পান করলেও অনেক সময় প্রস্রাবের পরিমাণ কম হতে পারে। এমনটি হলে বীজ ফেলে দিয়ে ৩/৪টা কাঁচা ঢেঁড়স আধা সের পরিমাণ পানিতে সেদ্ধ করুন। পানি অর্ধেক পরিমাণ থাকতেই নামিয়ে ছেঁকে নিন। এই পিচ্ছিল পানি খেলে প্রস্রাব সরল হয় এবং পরিমাণেও বেড়ে যায়। কয়েকদিন এই পানি খেলে প্রোস্টেট গ্ল্যান্ডের ক্ষরণের সমস্যা দূর হয়।
বাংলাদেশে ঢেঁড়স কেবল সবজি হিসেবেই খাওয়া হয়। কিন্তু কোনো কোনো দেশে ঢেঁড়সের পাতাও সবজি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে যাদের হজম শক্তি তেমন ভালো নয়, তাদের এ উপকারী সবজিটি বেশি খাওয়া উচিত নয়। তুরস্কে এর বীজ কফির বিকল্প হিসেবে খাওয়া হয়। ভারতে পরিষ্কার গুড় তৈরীর জন্যে আখের রসের সঙ্গে ঢেঁড়সের শেকড় ও কাণ্ড ব্যবহার করা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫/ এস আহমেদ