বিয়ে মানেই আপনার ভালবাসার মানুষকে সঙ্গী করে অজানা পথ চলার শুরু এক নতুন ঠিকানায়। সে দিন যতটা উত্তেজনা, ভাললাগায় মনপ্রাণ ভরেছিল, যে মাদকতায় আপনারা নিজেদের হারিয়েছিলেন, সেটাই তো সারাজীবন একসঙ্গে চলার রসদ, ভালভাবে বাঁচার জিয়নকাঠি। আর তাই তো জীবনের প্রতিটা দিন, প্রতিটি মুহূর্তকে সাজিয়ে তুলুন নিজের মনের মতো করে। অন্তরমহলের রঙে রাঙিয়ে দিন আপনার ভালবাসার অন্দরমহল। আধুনিক ধাঁচের ফ্ল্যাটবাড়ি হোক বা পৈতৃকবাড়ির সাবেকি অন্দরমহল, অন্দরসাজের আবেশে শুধুই থাকুক প্রেমের নিবিড় আলিঙ্গন।
অন্দরমহলে রোমান্টিক আবহ তৈরি করতে কিন্তু খুব বেশি আয়োজন করতে হয় না। শুধু একটু ক্রিয়েটিভিটি ও দু’জনের পছন্দ-অপছন্দ মাথায় রাখলেই তৈরি করা যায় স্বপ্নের বাড়ি। প্রথমেই আসি বেডরুমের কথায়। ঘরের রঙেই বদলে যেতে পারে ধরের চরিত্র। গাঢ় রং যেমন লালা কিন্তু প্যাশনের প্রতীক। আবার হালকা নীলেও রোমান্টিক মুড তৈরি হয়। ঘরে ব্রাইট রঙ করলে একটা পজিটিভ ভাইবও তৈরি হয়। ঘরে চড়া রং না করাতে চাইলে, আপহোলস্ট্রিতে নিয়ে আসুন ভাইব্রেন্ট টাচ।
ঘরের পর্দা, বেডস্প্রেড হিসেবে লাক্সারিয়াস স্যাটিন সিল্ক ব্যবহার করতে পারেন। এতে ঘরে একটা রিচনেস আসে। আবার বেডসাইড টেবলে একগোছা রজনীগন্ধা বা গোলাপের তোড়া রাখলেও ঘরে একটা সুন্দর আবহ সৃষ্টি হয়। বেডসাইড টেবলে আপনাদের দু’জনের ছবি তো রাখতে পারেনই, তা ছাড়াও সাজিয়ে রাখতে পারেন নানা রকম শোপিস অথবা বেড সাইড ল্যাম্প। খাটের সামনে পাতা উজ্জ্বল রঙের সুতির দড়ি কিংবা ঘরের এক কোণে রাখা কাঠের বা বেতের রিল্যাক্সিং চেয়ার সব মিলিয়ে তৈরি করতে পারেন আপনাদের একান্ত ব্যক্তিগত জোন।
আসলে রোমান্টিক অন্দরসাজের কোনও বাঁধাগত নিয়ম হয় না। নিজের মনের মাধুরী মিশিয়ে সাজালেই দেখবেন, তাই হয়ে উঠেছে রোমান্টিকতার প্রতীক। যেমন বসার ঘরে যদি সুযোগ থাকে একটু এক্সপেরিমেন্ট করতেই পারেন। তথাকথিত গা ডোবানো সোফার চেয়ে কাঠের কারুকাজ করা বেঞ্চ। কেতাবী কুশন কভারের বদলে হ্যান্ডপেন্টেড কুশন কভার। দেওয়াল জোড়া বড় বড় ক্যানভাসে তুলির টানে ক্রিয়েট করা ম্যাজিক। মেঝের উপর কাঁচ কিংবা মাটির ওরলিতে ফুল বা গোলাপের পাঁপড়ি সাজানো।
টেবলের উপর টকটকে লাল একগুচ্ছ গোলাপ আর টিউবলাইটের ফটফটে সাদা আলোর বদলে ঝাড়লন্ঠনের কিংবা ল্য্যম্পশেডের মায়াবী নরম আলো। রোজনামচার ব্যস্ত জীবনে হাঁপিয়ে ওঠা শরীর মনের কাছে এই তো পৌঁছে দেয় উষ্ণতার আবেদন। প্রেমের প্রস্তাব, মেটামরফোসিসের সুযোগ।
একে অন্যকে দেখলেই একটা চাপা উত্তেজনা, কাছাকাছি আসার প্রচেষ্টা, একান্তে ভাগ করে নেওয়া নিজেদের জীবন, এমন রোমান্টিক মুহূর্ত কাটানোর জন্যে চাই রোমান্টিক সেটিং। সময়-সুযোগে বেড়াতে তো যাবেন নিশ্চয়, কিন্তু শুধু সে কটা দিনের মধ্যেই রোমান্স সীমাবদ্ধ থাকবে আর সারা বছর থোর বড়ি খাড়া, এমনটা আমরা মানতে পারি না। প্রেমের জন্যে কোনও জায়গা আলাদা করে নির্দিষ্ট করার আমরা পক্ষপাতী নই। প্রেম তো আমাদের সারা জীবন জুড়ে, মন জুড়ে, আমাদের বাড়ির আনাচেকানাচে ছড়িয়ে, শুধু খুঁজে নেওয়ার অপেক্ষা।
প্রেম আসলে আমাদের জীবনে অনেকটা আশ্চর্য প্রদীপের মতো। চট করে পাওয়া যায় না। তাই অনেক যত্নে, পরম মমতায় আগলে রাখতে হয়। আর দাম্পত্যজীবনে প্রেমেরছোঁয়া যাতে সারাজীবন বজায় থাকে, তাতে অন্দরমহলে এটুকু বৈচিত্র্য তো আনাই যায়।
বিডি-প্রতিদিন/১৪ জানুয়ারি, ২০১৫/মাহবুব