পর্নোগ্রাফি আসক্তিতে ডুবে যাচ্ছে তরুণ প্রজন্ম। হাতে হাতে মাল্টিমিডিয়া মোবাইল, ল্যাপটপ, নেটবুকের কল্যানে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে পর্নোগ্রাফি। প্রযুক্তির বিকাশের হাজারো সুবিধার পাশে এটি এক ধ্বংসাত্মক অধ্যায় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। টিন এজার থেকে শুরু করে মধ্য বয়সী পুরুষও পর্নোগ্রাফি আসক্তিতে ভুগছেন। যদিও বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণায় দেখিয়েছেন, পর্নোগ্রাফি আসলে তেমন ক্ষতিকর নয় কিন্তু এর আছে দীর্ঘমেয়াদি বিরূপ প্রভাব। অতিমাত্রায় পর্নোগ্রাফি দেখার ফলে পুরুষরা নিজেদের কিছু ক্ষতি করে ফেলেন। আসুন জেনে নেয়া যাক এমন কিছু ক্ষতির কথা।
রুচিবোধের অবনতি হয়:
নিয়মিত পর্নো ছবি দেখলে পুরুষের রুচিবোধের অধঃপতন হয়। পর্নো মুভির অনৈতিক ও যৌনতানির্ভর বিকৃত সম্পর্কগুলোকেই তখন ভালো লাগতে শুরু করে। ফলে যারা নিয়মিত পর্নো মুভি দেখেন, তাদের রুচি বিকৃত হয়ে যায়। জীবনের স্বাভাবিক সম্পর্কগুলোতেও নিজের অজান্তেই তারা বিকৃতি খোঁজেন। সামনে কোন নারীকে দেখলে তাকে পর্নো তারকাদের সঙ্গে মিলিয়ে কল্পনার জালে ডুবে যান। অনেকসময় বিকৃত চাহিদা মেটাতে ঘটিয়ে বসেন নানা অঘটন।
নিঃসঙ্গতা আঁকড়ে ধরে:
অতিরিক্ত পর্নো নেশার কারণে সাধারণ নারীদের প্রতি বিতৃষ্ণা চলে আসে। বাস্তব জীবনে তারা পর্নো মুভির নায়িকাদের মতো আকর্ষনীয় দেহ ও চেহারার নারী খোঁজেন। কিন্তু মেকআপ, লাইট ও ক্যামেরার কারসাজিতে পর্নো মুভির নায়িকাদের মোহনীয়ভাবে দেখানো হয় যা বাস্তব জীবনে খুঁজে পাওয়া সম্ভব না। তাই পর্নো আসক্তরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিঃসঙ্গতায় আক্রান্ত হয় অথবা সংসার জীবনে অসুখী হয়।
শারীরিক ক্ষতি:
নিয়মিত পর্নো মুভি দেখলে নিজের হস্ত মৈথুনের অভ্যাসটাও বেশি থাকে। অতিরিক্ত হস্ত মৈথুন করার ফলে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি বাড়তে পারে এবং যৌনজীবনে নানান সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়।
নারীরা অসম্মানের চোখে দেখেন:
পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত পুরুষদেরকে সাধারণ রুচিশীল নারীরা হীনমন্য ও চরিত্রহীন মনে করেন। নারীরা যখন জানতে পারেন যে তার পরিচিত কোনো পুরুষ নিয়মিত পর্নো মুভি দেখেন তখন তার সম্পর্কে খারাপ মনোভাব জন্ম নেয় এবং তাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন।
সামাজিকভাবে হেয় হতে হয়:
পর্নো আসক্তদের মোবাইল, কম্পিউটার, পেন ড্রাইভ সবখানেই পর্নো ছবি থাকে। অনেক সময় এসব অনৈতিক বিষয়গুলো পরিবারের কাছে ধরা পড়ে যায়। ফলে আপনজনদের কাছে হেয় হতে হয় তাদেরকে।
ক্রাইমে উদ্বুদ্ধ করে:
পর্নোগ্রাফি আসক্ত ব্যক্তি সর্বদাই উত্তেজনার মধ্যে থাকে। তাই তার মধ্যে ধর্ষণ প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। এছাড়া মোবাইলে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ, সেগুলোকে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার মতো সাইবার ক্রাইমে উদ্বুদ্ধ হয়।
বিডি-প্রতিদিন/২১ মার্চ ২০১৫/ এস আহমেদ