সারা দিন যদি কম্পিউটারের মনিটরে চোখ রেখে অলসভাবে সময় কাটাতে হয় তাহলে শরীরের ওপর তার বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। কর্মক্ষেত্রে অস্বাস্থ্যকর জীবন-যাপন পদ্ধতি নানা সমস্যার জন্ম দেয়। পেশাজীবনের পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই কর্মক্ষেত্রে সুস্থ থাকাটা খুব জরুরি। সম্প্রতি হাফিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে কর্মক্ষেত্রে সুস্থ থাকার কয়েকটি উপায় বাতলে দেওয়া হয়েছে।
১. ঘন ঘন হাত ওয়াশ : অসুস্থতা থেকে নিজেকে সুস্থ্ রাখার এক নম্বর পথ হল ঘন ঘন হাত ধোয়া। অনেকেই এটিকে সিরিয়াসভাবে নেয় না। কিন্তু সুস্থ্ থাকতে হলে খাওয়ার আগে, টয়লেট, হাঁচি-কাশির পর হাত ধুয়ে নিতে হবে।
২. কর্মক্ষেত্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন: কাজের এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও গোছগাছ রাখুন। বসার জয়াগাটি পরিষ্কার রাখতে হবে। কারণ তাতে দিনে শত শত ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করে। যতদূর সম্ভব হাঁচি বাইরে করুন, সঙ্গে টিস্যু রাখুন। ডেস্ক স্প্রে করুন ও সুযোগ পেলেই নিজ আসনের উপরিভাগ ধুয়ে ফেলুন।
৩. বেশি করে পানি পান করুন: কর্মক্ষমতা ও নিজের শক্তি বাড়াতে বেশি বেশি পানি পান করুন। পানি কাজের প্রতি সতর্ক বা প্রস্তুত থাকতে সাহায্য করে, সতেজ ও স্বচ্ছ চিন্তা করতে সাহায্য করে আপনাকে। প্রয়োজনে বড় পানির বোতল কিনে তা ডেস্কে রাখতে পারেন।
৪. ডেস্কে হ্যান্ড ওয়াশের বিকল্প স্যানিটজার রাখুন: আগেই বলা হয়েছে, বেশি বেশি হাত ধুয়ে নিন। এটা খুবই স্বাভাবিক যে, কাজের দিনে সবসময় ডেস্ক ছেড়ে উঠা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে হাঁচি-কাশির পর দ্রুত হ্যান্ড স্যানিটজার ব্যবহার করতে পারেন। এজন্য এটি হাতের কাছেই রাখতে হবে যেন প্রয়োজনে দ্রুত ব্যবহার করা যায়।
৫. অসুস্থদের এড়িয়ে চলুন: যারা অসুস্থ বা যাদের অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছেন তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ট মেলামেশা থেকে দূরে থাকুন। তাদের সঙ্গে সময় কাটানোর পর প্রয়োজনে হাত মুখ ধুয়ে ফেলুন।
৬. স্বাস্থ্যকর খাবার খান: সব সময় স্বাস্থ্যকর খাবার খান। কর্মক্ষেত্রে দুপুরে হালকা ও স্বাস্থ্যকর খাবার খান। এসময় খাবারে চর্বিহীন প্রোটিন, সালাদ বা সতেজ শাকসবজি এবং সতেজ ফলমূল রাখতে পারেন।
৭. বিরতি নিন এবং মুক্ত বাতাস ও খোলা আকাশের নীচে ঘোরাঘুরি করুন: প্রতিদিন ভিটামিন ডি পেতে বাইরে যান। এমনকি আপনার ব্যস্তময় দিনগুলোতে কয়েক মিনিট বাইরে থাকুন। অফিস আওয়ারে একঘেঁয়েমি লাগলে আপনার অফিসের চারপাশে প্রাণবন্ত পরিবেশে হাঁটুন। অস্থির লাগলে নিজেকে শান্ত রাখুন। বিষন্নতা অনুভব করলে প্রকৃতিবেষ্টিত জায়গায় বসে গিয়ে কয়েকমিনিট ধ্যান করুন।
৮. হালকা নাস্তা করুন: সর্বোত্তম স্বাস্থ্য ও শক্তির জন্য ডেস্কে হালকা খাবার রাখতে পারেন। যখন ক্ষুধা লাগবে তখন তা খেতে পারেন। এক্ষেত্রে সতেজ বা শুকনো ফলমূল, বাদাম, দই ও পণির খাওয়া যেতে পারে। ২–৩ ঘণ্টা পরপর কিছু খেলে ব্লাড সুগার স্থিতিশীল রাখে ও পুরোদিন শক্তির মাত্রা ঠিক রাখে।
৯.ক্যাফেইন খাওয়া কমিয়ে দিন: আমরা কফি ভালোবাসি। কিন্তু মনে রাখতে হবে ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় পরিমাণমতো খেতে হবে। ধূমপান পরিহার করুন। কফিতে চিনি বা ক্রিম খাওয়া কমিয়ে দিন।
১০. সঠিকভাবে চাপ সামলান: ফলপ্রসূভাবে কাজ করতে সঠিকভাবে চাপ সামলাতে হবে। চাপ সামলাতে পরিবার ও ভালো বইয়ের সঙ্গ নেওয়া যেতে পারে। প্রথমত নিজের যত্ন নিজেকেই নিতে হবে ও সুস্থ ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।
১১. ব্যায়াম করুন: কাজের ফাঁকে মাঝে মাঝে শরীরকে চাঙ্গা রাখতে হালকা ব্যায়াম করতে পারেন।
বিডি-প্রতিদিন/২২ মার্চ ২০১৫/শরীফ