৩ আগস্ট, ২০২১ ১৫:১৫

আগস্ট মাস এলেই বিএনপি অতীতের অন্তর্জ্বালায় অস্থির হয়ে পড়ে : ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগস্ট মাস এলেই বিএনপি অতীতের অন্তর্জ্বালায় অস্থির হয়ে পড়ে : ওবায়দুল কাদের

ওবায়দুল কাদের

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগস্ট মাস এলেই বিএনপি রক্তাক্ত অতীতের অন্তর্জ্বালা নিয়ে অস্থির হয়ে পড়ে। বিএনপি এখন আষাঢ়ে গল্প ফেঁদেছে। বঙ্গবন্ধু হত্যায় নাকি আওয়ামী লীগ জড়িত এবং সরকার নাকি জিয়াউর রহমানের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে চাইছে - বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্য অনেকটা ‘ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাই না’ প্রবাদের মতো।

আজ মঙ্গলবার সকালে নিজ বাসভবনে ব্রিফিংকালে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিএনপি মহাসচিবের ‘অসত্য ও বিভ্রান্তিমূলক’ বক্তব্যের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। 

‘বঙ্গবন্ধু হত্যার কুশীলব কারা তা এখন জাতির কাছে স্পষ্ট’ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘কারা এ হত্যাকাণ্ডের সুবিধাভোগী? বঙ্গবন্ধু হত্যার পর খুনি মোশতাক কাকে সেনাপ্রধান করেছিলো? জিয়ার ভূমিকা কি ছিলো? খুনিরা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে কার কাছে রিপোর্ট করেছিলো? তখন জিয়ার মন্তব্য কি ছিলো? এসব ঐতিহাসিক সত্য বিএনপি নেতারা নতুন করে বাকপটুতায় ধামাচাপা দেওয়ার নির্লজ্জ ব্যর্থ চেষ্টা করছে, যা করেও কোন লাভ নেই। বিএনপির ‘শীবের গীত’ জনগণের কাছে এখন পরিষ্কার। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের কারা নিরাপদে বিদেশে চলে যেতে সহযোগিতা করেছিলো? কারা পুনর্বাসন ও  ‍পুরস্কৃত করেছিলো, দূতাবাসে কে চাকরি দিয়েছিলো? জিয়াউর রহমানকে ‘ধোয়া তুলসি পাতা’ বানানোর অপচেষ্টা জনগণ কখনো মেনে নেবে না। রক্তমূল্যে অর্জিত স্বাধীন দেশের সংবিধানে খুনিদের রক্ষায় ইনডেমনিটির বিধান ৫ম সংশোধনীর মাধ্যমে কে সংযোজন করেছিলেন?’’

ওবায়দুল কাদের আবারও বিএনপি মহাসচিবের কাছে জানতে চেয়ে বলেন, ‘জিয়াউর রহমান যদি এতই নিস্পাপ হয় তাহলে বিচার বন্ধ করলেন কেন? এতসব প্রশ্নের জবাব নিশ্চয়ই বিএনপি দিতে পারবে না। বিএনপি কথায় কথায় মানবাধিকারের কথা বলে, গণতন্ত্রের কথা বলে। অথচ সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যার একুশ বছর পর্যন্ত আমরা কোনো বিচারই চাইতে পারিনি। বিচার চাওয়ার অধিকার পর্যন্ত জিয়াউর রহমান কেড়ে নিয়েছিলেন। আর এখন মিষ্টি মিষ্টি কথায় নতুন ইতিহাসের প্রলাপ বকছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে বহুদলীয় তামাশা আর কারফিউ গণতন্ত্রের চালু করেছিলেন জিয়াউর রহমান, ক্ষমতায় থেকে প্রহসনের নির্বাচন করেছিলেন। হ্যাঁ-না ভোটের মাধ্যমে এদেশের নির্বাচনের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছেন জিয়াউর রহমান। আমরা জিয়ার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে যাবো কেন?  সময়ের ধারাবাহিকতায় চুল-চেরা বিশ্লেষণের মাধ্যমে ইতিহাসই যার যার স্থান নির্ধারণ করে দেয়। ইতিহাসের ভিলেনকে জোর করে ইতিহাসের নায়ক বানানো যায় না।’

‘এদেশের রাজনীতিতে খুন এবং হত্যাকাণ্ডের চর্চা বিএনপির নিজস্ব পেটেন্ট’  উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘বিএনপি এখনো হত্যার রাজনীতি ছাড়তে পারেনি, তার প্রমাণ ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর ও ২১ আগস্ট। বিএনপি রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে হাওয়া ভবন থেকে গ্রেনেড হামলার নির্দেশনা  ও  মনিটরিং করেছিল। বেগম জিয়া সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ‘শেখ হাসিনা নাকি ভ্যানিটি ব্যাগে করে বোমা নিয়ে গিয়েছিলেন! তাহলে জজ মিয়া নাটক কেন সাজিয়েছিলেন? কেন হত্যাকাণ্ডের আলামত নষ্ট করেছিলেন?’’

ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগকে নসিহত না করে আগে নিজেরা পরিশুদ্ধ হোন। আওয়ামী লীগ জন্মলগ্ন থেকে জনমানুষের রাজনীতি করে, মানুষের চোখের ভাষা ও মনের ভাষা বুঝেই শেখ হাসিনা রাজনীতি করছেন এবং সরকার পরিচালনা করছেন। বিএনপি নিজেদের দুর্গন্ধময় ইতিহাস থেকে বেরিয়ে আসুক, যদি তারা সত্যিকার অর্থে এদেশে সুস্থধারার রাজনীতি করতে চায়।’

 

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর