ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, বর্তমান সরকার ডিজিটাল যুগের অপার সম্ভাবনার সুযোগ কাজে লাগিয়ে ডাকঘরকে দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সেবা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর।
দেশজুড়ে ডাকঘরের বিস্তীর্ণ অবকাঠামো ও মানব সম্পদ কাজে লাগানোর মধ্যদিয়ে এ প্রতিষ্ঠানকে শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা অপরিহার্য এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই ক্ষেত্রে কোনো আপস নেই। তৃণমূল মানুষের প্রিয় এবং একইসাথে ভরসার প্রতিষ্ঠান ডাকঘড়।
আজ শনিবার রাজধানী থেকে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে রংপুর বিভাগীয় শহরে নবনির্মিত তিন ৩লা বিশিষ্ট জিপিও ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী অস্ট্রেলিয়া ও চীনের ডাকঘরের কার্যক্রম তুলে ধরে বলেন,‘ডিজিটাইজেশন যতো সম্প্রসারিত হবে ডাকঘরের প্রয়োজনীয়তা ততো বাড়বে। এজন্যই ডাকঘরের আগামী দিনের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে যা কিছু করণীয় আছে আমাদেরকে তাই করতে হবে।
তিনি ডাক অধিদপ্তরের বিদ্যমান মানব সম্পদকে কিভাবে কাজে লাগানো যায়, তা খতিয়ে দেখে সংশ্লিদের এব্যাপারে পরিকল্পনা গ্রহণ ও প্রদানের নির্দেশনা দেন।
ডাকঘরকে ডিজিটালাইজেশনের জন্য সম্প্রতি প্রণীত ‘ডিজিটাল সার্ভিস ল্যাব’র পরামর্শগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে ডাকসেবার আমুল পরিবর্তন ঘটবে বলেও মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
তিনি ডিজিটাল সার্ভিস ল্যাব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করার তাগিদ দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ আর তলাবিহীন ঝুড়ি না, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশনারি নেতৃত্বে পদ্মাসেতু, কর্ণফুলি টানেল, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমানবিক কেন্দ্রসহ অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।
ডাকঘরে কর্মরত এক্সট্র ডিপার্টমেন্টাল- ইডি কর্মচারিদের যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে তাদের ন্যায্যতার বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ বলেও মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
ডিজিটাল কমার্স সংগঠন প্রতিষ্ঠার অন্যতম ব্যক্তিত্ব মোস্তাফা জব্বার সাড়ে নয় হাজার ডাকঘরকে বিদ্যমান উদ্যোক্তাদের উপযোগী করে তৈরি করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন,‘আমরা যদি উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষিত করতে পারি, তবে ডিজিটাল কমার্সের ব্যাপক সক্ষমতা আমরা গড়ে তুলতে পারবো। তিনি বলেন, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমরা মাস্টার ট্রেইনার তৈরি করছি। এজন্য ব্যবসার কাজে যতটুকু ডিজিটাল দক্ষতার দরকার সেটা করতে হবে।’
মন্ত্রী এ সময় জানান, দেশব্যাপী ডাকঘরের সুবিশাল নেটওয়ার্ক ডিজিটাল কমার্সে নিয়োজিত বেসরকারি উদ্যোক্তাদের ব্যবহারের জন্য নির্ভরযাগ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রস্তুত করা হচ্ছে। এর ফলে দেশব্যাপী দ্রুত সময়ে শাকসবজীসহ পঁচনশীল পণ্য পরিবহন ও বিতরণ সম্ভব হবে। এই লক্ষ্যে ডাক পরিবহণের গাড়ী ও দেশের ৬৪টি জেলায় শর্টিং সেন্টারে হিমায়িত চেম্বার করার উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। এর ফলে দেশে ব্যবসা বাণিজ্যের বিকাশে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। ডিজিটাল কমার্স সেবা যুক্ত করায় ডাকবিভাগ নতুনরূপে আবির্ভুত হচ্ছে জানিয়ে মোস্তাফা জব্বার ডাক অধিদপ্তরের সকল স্তরের কর্মকর্তাকে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বজায় রেখে কাজ করার নির্দেশনা প্রদান করেন।
ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সিরাজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে ডাক অধিদপ্তরের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ভার্চূয়্যালি এবং স্ব-শরীরে উপস্থিত ছিলেন।
ডাক বিভাগের মহাপরিচালক ডাক বিভাগ’কে ডিজিটালাইজেশনের জন্য গৃহীত কর্ম পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিভিন্ন উদ্যোগের অগ্রগতি তুলে ধরেন।-বাসস
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত