তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, 'আমাদের দেশে নির্বাচন হবে আমাদের সংবিধানের আওতায়। নির্বাচনে সংবিধানের একচুল ব্যত্যয় হবে না। সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারই নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই নির্বাচনকালে প্রধানমন্ত্রী থাকবেন।'
শুক্রবার সকালে কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতার পূর্বে সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ সব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
এ সময় তথ্যমন্ত্রী বলেন, ভারত, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, কন্টিনেন্টাল ইউরোপের ফ্রান্স, জার্মানিসহ সকল গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে যে সরকার দেশ পরিচালনা করে আসছে, তারাই নির্বাচনকালে সরকারের দায়িত্ব পালন করে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ করে না।
আর বিএনপি যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি দিচ্ছে, তা শুধু পাকিস্তানে আছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমার প্রশ্ন-তারা শুধু পাকিস্তানকে কেন অনুসরণ-অনুকরণ করে! মির্জা ফখরুল সাহেব ক'দিন আগেও বলেছেন-পাকিস্তানই ভালো ছিল। তারা পাকিস্তানকে অনুকরণ করবে এটাই স্বাভাবিক।'
এ সময় বিএনপির আন্দোলন নিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, 'এখন বিএনপি হচ্ছে পা ভাঙা বাঘ আর খাঁচায় বন্দী সিংহ। তাদের তর্জন-গর্জনই সার। অন্য কিছু করার সামর্থ্য তাদের নেই। আর তারা যদি দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা-স্থিতি বিনষ্টের অপচেষ্টা করে, সরকার কঠোর হস্তে দমন করবে আর আওয়ামী লীগ জনগণকে সাথে নিয়ে প্রতিরোধ করবে।'
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের সফর নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ইইউ প্রতিনিধি দল এসেছে নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণে। অন্য কারো আমন্ত্রণে নয়। যেহেতু নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণে এসেছে, তারা কমিশনের সাথে, সরকারি দল, বিরোধী দল-সবার সাথেই বৈঠক করেছে। এবং তাদের এই আসাটা অত্যন্ত ইতিবাচক কারণ, নির্বাচন কমিশন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে ইইউ প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। ইইউ তাদের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে। এটি খুবই ইতিবাচক।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারিসহ উচ্চপদস্থ প্রতিনিধি দলের সফর সম্পর্কে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের চমৎকার বহুমাত্রিক সম্পর্ক। তারা আমাদের উন্নয়ন অভিযাত্রার সহযোগী এবং কিছুদিন আগে আমরা দু'দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উদযাপন করেছি। সেই আলোকে এই চমৎকার সম্পর্ক আরো দৃঢ় করার লক্ষ্যেই তাদের এই সফর। এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১২ লক্ষের বেশি রোহিঙ্গাকে দেশে আশ্রয় দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল সেই আশ্রয় ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। যাওয়ার আগে তারা বলেছেন, আমাদের সম্পর্ক এগিয়ে যাবে। অর্থাৎ তাদের সফরও আমাদের সম্পর্ককে দৃঢ়তর করেছে।
এ দিন কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদ হলে আয়োজিত বর্ধিত সভায় জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ্ব মো. জাফর আলীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জুর সঞ্চালনায় সভায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির আহমেদ, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী প্রধান বক্তা, কেন্দ্রীয় সদস্য এড. সফুরা বেগম রুমি, এড. হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দেন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত