বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘পরাজিত স্বৈরাচারী সরকারের অনেক দোসর আমলাতন্ত্রে, পুলিশসহ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ঘাপটি মেরে আছে। তারা দেশে এখনও নাশকতা ও চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে। টাকা পাচারের দুর্নীতি ঢাকতে সচিবালয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, সড়ক ও ডাক বিভাগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ফাইল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকার পাচারের ঘটনা যেন আলোর মুখে দেখতে না পারে সেই ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।’
আজ শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা ইউনিয়নের ছড়ান আটপুনিয়া গ্রামে সচিবালয়ে আগুন নেভাতে গিয়ে নিহত ফায়ার সার্ভিসের সদস্য সোহানুর জামান নয়নের পরিবারের সাথে সাক্ষাত শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, ‘দেশের মানুষের টাকা আত্মাসাত করেছে শেখ হাসিনা। আজকে তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৩৫০ মিলিয়ন ডলার পাচারের কাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করছে। আমাদের সামনে অনেক কাজ বাকী রয়েছে। আমরা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে যদি রক্ষা করতে পারি, তাহলে দেশের নাগরিকের স্বাধীনতা নিশ্চিত হবে। গোটা পৃথিবী শেখ হাসিনার পতন এবং নতুন গণতন্ত্রের সম্ভাবনার জন্য আন্দোলনে আহত ও শহীদদের প্রতি সংহতি জানিয়েছেন।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘সচিবালয়ে আসবাবপত্র, নথিপত্র অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হয়েছে। এটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। শেখ হাসিনা সরকারের একজন প্রতাপশালী আমলা মুখ্য সচিব অনেক টাকা পাচার করেছেন। তার ফাইলটি ছিল পুড়ে যাওয়া ফাইলে মধ্যে। যারা এই অগ্নিকাণ্ড নির্বাপণের জন্য যুদ্ধ করেছেন তাদের মধ্যে সোহানুর জামান নয়ন একজন। আমি মনে করি তাদের পরিবারের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।’
এদিন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে সচিবালয়ে আগুন নেভাতে গিয়ে নিহত ফায়ার সার্ভিসে কর্মরত নয়নের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করতে যান ‘আমরা বিএনপির প্রতিনিধি’ দল।
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার আটপুনিয়া গ্রামের সন্তান নিহত ফায়ার ফাইটারের পিতা-মাতার সাথে সাক্ষাতকালে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবীব দুলু, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’র আহ্বায়ক ও সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন, রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু, বিএনপি রাজশাহী-রংপুর বিভাগ মিডিয়া সেলের প্রধান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’র সদস্য সাংবাদিক কালাম আজাদ, বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম, মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জহির আলম প্রমুখ। পরে আমরা বিএনপি পরিবার এর প্রতিনিধি দল নিহত নয়নের কবর জিয়ারত করেন। কবর জিয়ারতের সময় নয়নের পিতা আখতারুজ্জামান কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি দুহাত তুলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্য দোয়া ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এরআগে বিএনপি পরিবার রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার আটপুনিয়া গ্রামে পৌঁছালে হাজার হাজার মানুষ তাদেরকে শুভেচ্ছা জানান। এ সময় বিএনপির রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলা, উপজেলার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন