মানুষের অমরত্ব নিয়ে গবেষণা করতে করতে কত কত বিজ্ঞানী চুল পাকিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন। কিন্তু অমরত্বের সন্ধান মেলেনি। এবার বোধহয় সেই প্রশ্নের উত্তর মিলতে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেয়েছেন দীর্ঘায়ু হওয়ার নতুন দিশা। আর এর জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন, ১১৫ বছরে বৃদ্ধা হেনড্রিকজ ভন অ্যান্ডেল স্কিপারকে। অবশ্য ২০০৫ সালেই মারা যান তিনি। কিন্তু তাঁর দীর্ঘ আয়ুর রহস্য খোঁজার জন্য শরীর থেকে রক্ত সংগ্রহ করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। রক্ত পরীক্ষায় দেখা গেছে, আমাদের কোষের বৃদ্ধির ক্ষমতার উপরই নির্ভর করছে জীবনের আয়ু।
আমরা জন্মাই প্রায় কুড়ি হাজার হেমাটোপোয়েটিক স্টেম কোষ নিয়ে। প্রতিটি কোষ ২৫ থেকে ৫০ সপ্তাহের মধ্যে ভাগ হয়ে যায় নতুন দুই কোষে (daughter cells)। এই কোষেরা তৈরি করে বিভিন্ন ধরনের রক্ত কোষ। প্রায় ১৩শ' হেমাটোপোয়েটিক স্টেম কোষ (hematopoietic stem) হাড়ের মজ্জাতে তৈরি করে শ্বেতরক্ত কনিকা কোষ। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, মৃত্যুর সময় ওই বৃদ্ধার রক্তে দুই সক্রিয় স্টেম কোষের প্রতিনিয়ত ক্ষয় হয়। পরে কোষগুলি অকেজো হয়ে পড়ে। অন্যদিকে শ্বেত রক্ত কনিকার ক্রোমোজম খুব ছোটো হতে থাকে। এর ফলে ভদ্রমহিলার রক্ত কোষ ধিরে ধিরে বার্ধক্যের দিকে অগ্রসর হয়েছে। জিনম রিসার্চ (Genome Research) জানিয়েছে, মানুষের আয়ু নির্ভর করছে কতবার স্টেম কোষ ভাগ হচ্ছে তার উপর।
গবেষক হেন হলস্টেজ মনে করেন, স্টেম কোষ (stem cell) হল অমরত্বের চাবিকাটি। তিনি জানিয়েছেন, মানুষ জন্মাবার পর থেকেই যদি স্টেম কোষগুলিকে সঠিকভাবে রক্ষা করা যায়, তাহলে আমরা বেশিদিন বাঁচতে পারি। এখন কীভাবে এই স্টেম কোষকে রক্ষা করা যায় তাই নিয়েই উঠেপড়ে লেগেছেন বিজ্ঞানীরা।