৩০ মার্চ, ২০২০ ০৯:১৫

ওয়াশিংটনের চিড়িয়াখানায় হাতিকে দেওয়া হলো 'স্বেচ্ছামৃত্যু'

অনলাইন ডেস্ক

ওয়াশিংটনের চিড়িয়াখানায় হাতিকে দেওয়া হলো 'স্বেচ্ছামৃত্যু'

আম্বিকা

ইউথ্যানাশিয়া বা যন্ত্রণাহীন মৃত্যু। চলতি ভাষায় স্বেচ্ছামৃত্যু। যে সব রোগীর আর সুস্থ হয়ে ওঠার কোনও আশা নেই, তারা চাইলে এই মৃত্যু কামনা করতে পারেন নিজের প্রিয়জনদের কাছে। সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনেক মামলা, তর্কবিতর্কের পর কোনও কোনও ক্ষেত্রে শর্তাবলি মেনে গৃহীত হয়েছে এই নিয়ম। কিন্তু এবার মানুষ নয়, এক অবলা পশুকে দেওয়া হল এই মৃত্যু। ঘটনাটি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের স্মিথসোনিয়ান জাতীয় চিড়িয়াখানায়। 

ওই চিড়িয়াখানার এশীয় হাতিদের মধ্যে সবচেয়ে বয়স্ক ভারতীয় হাতি, ৭২ বছরের আম্বিকাকে স্থানীয় সময় গত শুক্রবার ইউথ্যানাইজড করা হয় বা যন্ত্রণাহীন মৃত্যু দেওয়া হয়। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের তরফে বলা হয়, গত সপ্তাহে আম্বিকার মাহুতরা লক্ষ্য করেন অম্বিকার ডান দিকের সামনের পা বেঁকে গিয়েছে। এমনকি, তার সঙ্গী দুই হাতি শান্তি এবং বনজি'র সঙ্গে সময় কাটাচ্ছে না। মাহুতদের কাছে আসছে না। ভালোমতো খাওয়াদাওয়া করছে না। তৎক্ষণাৎ অম্বিকার জন্য পশু চিকিৎসক ডাকে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। 

অনেক ওষুধ, সেবার পরও শরীর ক্রমশ ভাঙতে থাকে আম্বিকার। তার বয়স, শারীরিক এবং মানসিক অবস্থা বিচার করার পরই পশু চিকিৎসকরা চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ এবং মাহুতদের সঙ্গে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেন, আম্বিকাকে যন্ত্রণাহীন মৃত্যু দেওয়ার। অম্বিকার মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করে টুইট করেছে আমেরিকায় ভারতীয় দূতাবাস। 

প্রিয় হাতির মৃত্যুতে শোকগ্রস্ত চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৯৪৮ সালে ভারতে জন্ম হাতিটির। সেই ছিল উত্তর আমেরিকার তৃতীয় বয়স্ক হাতি। মাত্র আট বছর বয়সে হাতিটিকে ধরা হয়। তারপর ১৯৬১ সাল পর্যন্ত কুর্গের জঙ্গলে কাঠ বয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করত। পরে ভারত-আমেরিকা দ্বিপাক্ষিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের খাতিরে ভারতীয় শিশুরা অম্বিকাকে ওয়াশিংটনের ওই চিড়িয়াখানায় উপহার দেয়। 

আম্বিকার মাহুতরা জানান, তার বুদ্ধি এবং রসবোধ ছিল প্রচুর। আম্বিকাকে চাষের কাজ স্বাস্থ্য পরিষেবার কাজে লাগানো হত। এশিয়ার হাতি বাঁচাও আন্দোলনের মুখ হিসেবে অম্বিকাকে ব্যবহার করত স্মিথসোনিয়ান চিড়িয়াখানা। মেয়ে হাতিদের ৪০ বছরের মধ্যে জড়ায়ুতে হওয়া লিমায়োমাস ফাইব্রয়েড আকছাড় তাদের মৃত্যুর কারণ হয়। সেটা রুখতে অম্বিকাকেই প্রথম গোনাডোট্রোপিন রিলিজিং হরমোন ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল। যার সুফল পেয়েছিল হাতিটি।

 

বিডি-প্রতিদিন/সিফাত আব্দুল্লাহ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর