বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের শরনখোলা রেঞ্জের ভোলা নদীর বিমলের চর এলাকায় ডুবে যাওয়া সারবোঝাই এম ভি জাবালে নূর নামের লাইটারেজ জাহাজটি বুধবার দুপুর পর্যন্ত উদ্ধার করা যায়নি। অপসারণ করা যায়নি জাহাজের খোলে থাকা পানিতে গলে যাওয়া অবশিষ্ট পটাশ সার। জোয়ারের পানিতে জাহাজটিকে থাকা অধিকাংশ সার পানিতে মিশে সুন্দরবনের বিভিন্ন খালের পানিতে ছড়িয়ে পড়েছে। তলা ফেটে ডুবে যাওয়া লাইটারেজ জাহাজের চালক মো. হাফিজু রহমান মঙ্গলবার রাতে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে শরণখোলা থানায় সাধারণ ডায়েরি করছে।
এদিকে, সারবোঝাই জাহাজডুবিতে সুন্দরবনের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি উল্লেখ করে শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা এসিএফ কামাল উদ্দিন আহমেদ থানায় লাইটারেজ জাহাজ কতৃপক্ষকে আসামি করে মামলা করেছে। এঘটনা তদন্তে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসন ও সুন্দরবন বিভাগ পৃথক দুটি কমিটি গঠন করেছে।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব মো. শফিকুর রহমানকে প্রধান করে ৫ সদস্যের কমিটি ৭ দিনের মধ্যে ও পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. আমির হোসাইন চৌধুরীকে প্রধান করে ৪ সদস্যের কমিটি তিন দিনের মধ্যে তাদের রির্পোট পেশ করবে। ঘটনাস্থলে থানা বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর আলম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, দুটি কমিটি কাজ শুরু করেছে।
জেলা প্রশাসক জানান, লাইটারেজ কার্গো জাহাজটিতে থাকা পানিতে গলে যাওয়া অবশিষ্ট সার বালি উত্তোলনের ড্রেজার মেশিন দিয়ে বিকেলের মধ্যে অপসারণের কাজ শুরু করা হবে।
দুর্ঘটনাকবলিত লাইটারেজ জাহাজটি মংলা বন্দরের অদূরে পশুর নদীর হারবারিয়া এলাকা থেকে ৬ শ' ৭০ মেট্রিক টন পটাশ সার বোঝাই করে গত ১ মে আশুগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। পথিমধ্যে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের ভোলা নদীর বিমলের চরে ৪ মে সোমবার সন্ধ্যায় চরে আটকা পড়ে। মঙ্গলবার বিকেলে জাহাজটির তলা ফেটে কাত হয়ে ডুবে যায়। ফলে জাহাজে থাকা পটাশ সার সুন্দরবনের পানিতে মিশে একাকার হয়ে যায়।
এর আগে গত ৯ ডিসেম্বর পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের শ্যালা নদীতে ফার্নেস অয়েলবোঝাই ‘সাউদার্ণ স্টার সেভেন’ নামের একটি জাহাজডুবির ঘটনা ঘটে। পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে সুন্দরবকে বাঁচাতে সে সময়ে ছুটে আসে জাতিসংঘের বিষেশজ্ঞ দল। ৫ মাস যেতে না যেতেই সারবোঝাই এ জাহাজডুবির ঘটনায় সুন্দরবন আবারও পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়ল।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৬ মে, ২০১৫/ রশিদা