ভারতীয় সংসদে স্থল সীমান্ত চুক্তি পাশ হওয়ার পর পঞ্চগড়ের ছিটমহলগুলোতে নতুন ঘরবাড়ি নির্মাণের ধুম পড়েছে। ছিটমহলের বিভিন্ন গ্রামে গত তিন দিনে ৩৬ ছিটমহলে অন্তত শতাধিক পরিবার নতুন করে বাড়ি করেছেন। বাসের খুটি আর টিনের চালা দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে এসব বাড়ি।
জানা গেছে, নিরাপত্তার অভাবে ছিটমহলের অনেক পরিবারই বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রামে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল। এসব পরিবারের জমি ও পুরোনো ভিটেবাড়ি ছিটমহলেই ছিল। ছিটমহলগুলো এখন বাংলাদেশ হয়েছে শুনে তারা এখন আবার ফিরে আসছে ছিটমহলে।
গত চারবছর আগে গারাতী ছিটমহলে একটি ডাকাতি ও খুনের ঘটনায় বাংলাদেশি ও ছিটমহল বাসীদের মধ্যে ব্যাপক সংর্ঘর্ষ হয়। সেসময় ছিটমহলের প্রায় ১১০টি বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়। এ সময় অনেকেই ছিটমহল থেকে চলে যায় এবং আশ্রয় নেয় আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে। গারাতি ছিটমহলের নুর মোহাম্মদ সে সময় আশ্রয় নিয়েছিলেন আমবাড়ি গ্রামে চাচা শ্বশুড়ের বাড়িতে।
তিনি জানান, নিরাপত্তার অভাবে ছিটমহলে জমিজায়গা রেখে পরের বাড়িতে ছিলাম। এখন আমি বাংলাদেশি। আর কোন ভয় নেই। তাই পুরান ভিটায় আবার বাড়ি করছি।
এদিকে, ছিটমহল শান্তিকমিটির মাধ্যমে অনেক বাংলাদেশিই ছিটমহলে জমি কিনেছিলেন। জমি দখলে রাখার জন্য তারাও এখন বাড়ি করছেন ছিটমহলে। জেলার অমরখানা ইউনিয়নের আমবাড়ি গ্রামের বাদশা মোহাম্মদ ৫ ভাই মিলে বিঘা প্রতি ৩০ বছর আগে ১২০০ টাকা, ১৫ বছর আগে ৪ হাজার টাকা এবং গত দু'বছর আগে ৭০ হাজার টাকায় ৪০ বিঘা জমি কিনেছেন। ছিটমহলগুলো বাংলাদেশ হওয়ার ঘোষণায় তারা এখন নতুন বাড়ি করা শুরু করেছেন।
তিনি জানান, বাড়ি করার মতো ভাল জায়গা ছিল না। তাই এখন বাড়ি করছি। এদিকে ছিটমহলে বাড়ি করলে সুযোগ সুবিধা মিলবে বলে অনেকেই তাড়াহুড়ো করে বাড়ি করছেন বলে দু'একজন অভিযোগ করেছে। তারা বলেন, ছিটমহলে নেতৃত্ব নেওয়ার জন্য অনেকে তাড়াহুড়ো করে বাড়ি নির্মাণ করছেন।
বিডি-প্রতিদিন/১১ মে, ২০১৫/মাহবুব