বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী বলেছেন, উন্নত বিশ্বে শিল্পোদ্যোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষিত জনবল তৈরি করা হয়। দ্রুত শিল্পোন্নয়নে এটা খুব জরুরি। এখানেও ফেডারেশনকে জানাতে হবে তারা কেমন জনবল চায়। আর সেভাবেই শিক্ষা কার্যক্রম সাজাতে হবে।
ভারতের নয়াদিল্লিতে 'এফআইসিসিআই উচ্চশিক্ষা সামিট ২০১৫'- এ অংশগ্রহণ শেষে দেশে ফিরে শনিবার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এ কথা বলেন তিনি। গত ৩ ও ৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত এ সামিটে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষাবিদ, গবেষক, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি, নীতি নির্ধারক, সরকারি কর্মকর্তা, করপোরেট ও শিল্পের প্রতিনিধি, দূতাবাস কর্মকর্তা, এনজিও এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও বিভিন্ন স্টেকহোল্ডাররা অংশ নেন। ভারতের মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রনালয়ের সহায়তা সম্মেলনের আয়োজন করে ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই)।
ড. আজাদ বলেন, উচ্চশিক্ষায় আমাদের অর্জনও নেহাত কম নয়। কিন্তু বাইরে এর প্রচার নেই। বাংলাদেশে গত চার বছরে বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েট ১১ লাখ থেকে ৩১ লাখে পৌঁছেছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ৫৪টি থেকে ৮৫টি হয়েছে। বেড়েছে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা। এখানে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার রেকর্ড নেই বলা যায়। শিক্ষার্থীর অভাবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয় না। উচ্চশিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণের হার পুরুষের প্রায় সমানে পৌঁছে গেছে। কিন্তু প্রচার না থাকায় বিশ্বের মানুষ এগুলো জানে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষাখাতের এ উন্নয়ন সম্মেলনে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। বিশেষ করে বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে 'উচ্চশিক্ষায় মানোন্নয়ন প্রকল্প', বাংলাদেশ এক্রেডিটেশন কাউন্সিল, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০, উচ্চশিক্ষায় নারী-পুরুষের সমতা, ৩১ লাখ উচ্চশিক্ষিত জনবল তৈরির বিষয়গুলো প্রশংসা কুড়িয়েছে।
তবে যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে বাজার বুঝে শিক্ষিত জনবল তৈরি করতে হবে বলে মনে করেন এ অধ্যাপক। তিনি বলেন, ভারত আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এশিয়ার মধ্যে অন্যতম শিল্পোন্নত দেশে পরিণত হতে চায়। এজন্য সেখানকার শিল্প ফেডারেশন সম্মেলনের আয়োজন করে তাদের কেমন জনবল প্রয়োজন তা জানাচ্ছে। আর সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশেও চাহিদা জানাতে হবে শিল্পোদ্যেক্তাদের। তবে সেখানে কোন আমলাতান্তিকতা নেই মন্তব্য করে ড. আজাদ বলেন, ব্যবসায়ী ও উদ্যেক্তরা যেমনটা চাইছেন তেমন করেই সব সরবরাহ করা হচ্ছে। দ্রুত শিল্পোন্নয়ন চাইলে বাংলাদেশেও শিল্পের সব প্রতিবন্ধকতা, আমলাতান্ত্রিকতা দূর করতে হবে। আর শিল্পের চাহিদা বুঝে জনবলকে জনসম্পদে পরিণত করতে হবে।
তবে এত প্রতিকূলতার মধ্যেও শিক্ষায়, শিল্পে বাংলাদেশের উন্নতি বিশ্বের কাছে ঈর্ষণীয় বলে মনে করেন ড. এ কে আজাদ। কারণ নানা সমস্যার মধ্যেও বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন ছাড়িয়েছে, পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ।
বিডি-প্রতিদিন/০৭ নভেম্বর ২০১৫/ এস আহমেদ