বিশিষ্ট সাংবাদিক শফিক রেহমান ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র অধ্যাপক এমএ মান্নানকে অবিলম্বে মুক্তি না দিলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিএনপি।
রাজধানীর নয়াপল্টনে শনিবার সকালে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী একথা বলেন। শফিক রেহমান ও মান্নানের গ্রেফতারের প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
রিজভী বলেন, ‘আমরা যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি তাদের জীবন-যাপন নিরাপদ নয়। আর যারা সরকারের অপকর্ম ও অপশাসনের খবরা-খবর লেখেন তারাও নিরাপদ নয়। সরকারের সর্বশেষ নির্যাতনের শিকার হলেন শফিক রেহমান। তাকে গ্রেফতার করা সরকারের চৈতন্য লোপের শামিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘শফিক রেহমানকে গ্রেফতার একটি ঘৃণ্য নাটক। সরকার কোনো দিক সামাল দিতে পারছে না। তার মতো একজন গুণী ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে সরকারের ব্যর্থতাকে আড়াল করার চেষ্টা করছে। তার গ্রেফতার প্রতিবাদে বিএনপির পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি। যে মিথ্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে অবিলম্বে তা প্রত্যাহার করে মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, ‘শফিক রেহমানের পিতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিতার (শেখ মুজিবুর রহমানের) শিক্ষক ছিলেন। গুণীজনদের যদি এ পরিণতি হয় তাহলে কোন শকুনীরা দেশ চালাচ্ছে। এ দেশকে কারা ছিড়ে টুকরো টুকরো করছে। বিশিষ্ট সাংবাদিক শফিক রহমান গ্রেফতার হলে সাধারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা কোথায়? অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবার ছাড়া এ দেশে কারো সম্মান ও বাস করার অধিকার নেই।’
এর আগে, শনিবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে ইস্কাটনের বাসা থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে সাংবাদিক শফিক রেহমানকে তুলে নেওয়া হয়েছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। পরে ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়ে, পল্টন থানায় দায়ের করা রাষ্ট্রদ্রোহ একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে, সর্বোচ্চ আদালত থেকে স্থানীয় সরকারের বরখাস্তের আদেশ ৬ মাসের স্থগিতাদেশ পাওয়া মেয়র মান্নান শুক্রবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে গাজীপুর থেকে ঢাকা আসার পথে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘বর্তমান অবৈধ ভোটারবিহীন সরকার নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দেখতে পারে না। তাই গাজীপুরের নির্বাচিত মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানকে গ্রেফতার করেছে। দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় কারাভোগের পর তাকে ফের গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার ও সহ-দফতর সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/১৬ এপ্রিল, ২০১৬/মাহবুব