বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে গত এক দশকে সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে সিজারের সংখ্যা নানা অজুহাতে বেড়েই চলছিলো। যদিও চিকিৎসকরা সবসময়ই বলে থাকেন যে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সিজারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় না। তবে অনেকেই অভিযোগ করেন ঝামেলা এড়াতে আবার কখনো কখনো বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকগুলো অর্থের লোভে সিজারকেই বেশি উৎসাহিত করে থাকে।
এই সিজার বা অস্ত্রোপচারের বিরুদ্ধে সন্তান জন্মদানের বিষয়টাকে নিরুৎসাহিত করতে কয়েক বছর আগে কয়েকটি সংস্থার সমন্বয়ে গড়ে ওঠে - স্টপ আননেসেসারি সি-সেকশন- নামে একটি প্রচারণা। মূলতঃ সেভ দা চিলড্রেন, ব্র্যাক, আইসিডিডিআরবি সহ নানা আন্তর্জাতিক সংস্থার সমন্বয়ে এটি গড়ে ওঠে। ২০১৯ সালের জুনে তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে সিজারের হার ৮৩ শতাংশ, সরকারি হাসপাতালে ৩৫ শতাংশ ও এনজিও হাসপাতালে ৩৯ শতাংশ।
এবার বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর কয়েক মাস পর তারা তাদের জুলাই মাসের প্রতিবেদনে দাবি করেছেন, করোনা সঙ্কটের সময়ে বাংলাদেশে সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের প্রবণতা কমেছে।
আবার সরকারি হিসেবেও দেখা যাচ্ছে, দেশের সরকারি বেসরকারি সব হাসপাতাল ক্লিনিক মিলিয়ে গত জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত সি-সেকশন বা সিজারের মাধ্যমে সন্তান জন্মদানের হার কমছে।
সরকারি হিসেবেই জানুয়ারি মাসে নরমাল ডেলিভারি বা স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে ৫০ হাজার ৮৭৮টি যেখানে সিজার হয়েছে ৪৩ হাজার ৮৭৯টি।
পরে ফেব্রুয়ারি মাসে সিজার হয়েছে ৩৯ হাজার ৮৩২টি, মার্চ মাসে ৩৭ হাজার ৪১১টি, এপ্রিল মাসে ৩২ হাজার ৫৯১টি, মে মাসে ৩৩ হাজার ৮০৮টি, জুন মাসে ৩৬ হাজার ৯০টি এবং জুলাই মাসে ৩২ হাজার ১৭৩টি নরমাল ডেলিভারির বিপরীতে সিজার হয়েছে ২৬ হাজার ৮০২টি।
সরকারি হাসপাতালের চিত্র
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের হিসেবে সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে সিজারের সংখ্যা খুবই কম।
ফেব্রুয়ারি মাসে এসব হাসপাতালগুলোতে ১৩৫২৩টি নরমাল ডেলিভারি হয়েছে আর সিজার হয়েছে ৬১১টি। পরবর্তী মাসগুলোতে সিজারের সংখ্যা আরও কমেছে।
প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী মার্চ মাসে সিজার হয়েছে ৫১৪টি, এপ্রিলে ২৯৭টি, মে মাসে ২৫৫ ও জুন মাসে ১১হাজার ৮৫৭টি স্বাভাবিক প্রসবের বিপরীতে ২৯১টি সিজার হয়েছে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা