খন্দকার মোশতাককে নিয়ে দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে ব্যাখ্যা এবং দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহ। সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দুঃখ প্রকাশ করেন।
অধ্যাপক রহমত উল্লাহ বলেন, রবিবারের আলোচনা সভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় আমি যদি অজ্ঞতাবশত কোনো শব্দবাক্য উচ্চারণ করে থাকি তা নিতান্তই আমার অনিচ্ছাকৃত ভুল। এজন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা করছি। একইসঙ্গে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির মধ্যে যেন কোনো ধরনের ভুল বুঝাবুঝি সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে সচেতন থাকার জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক-বাহক এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী সবাইকে অনুরোধ করছি।
লিখিত বক্তব্যে ঢাবির এ শিক্ষক নেতা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় আমি মুজিবনগর সরকার গঠনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৬ শে মার্চ বঙ্গবন্ধু কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণা, ১০ই এপ্রিল ১৯৭১ মুজিবনগর সরকার গঠন ও স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র এবং ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণসহ মুক্তিযুদ্ধকালীন এ সরকারের কর্মপরিকল্পনা এবং মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী স্বাধীন বাংলাদেশ বিনির্মাণ বিষয়ে আলোচনা করি।
তিনি বলেন, আলোচনাকালে মুজিবনগর সরকারেকে কোনো মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছিলেন তা উল্লেখ করি এবং মুজিবনগর সরকারের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করি। আমার বক্তব্যের এক পর্যায়ে মুজিবনগর সরকারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কুলাঙ্গার এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন ও পরবর্তীকালে জাতির সঙ্গে বিশ্বষাতকতাকারী বঙ্গবন্ধুর খুনী খন্দকার মোস্তাক আহমেদের প্রতি আমি আমার ব্যক্তিগত ঘৃণা ও ক্ষোভ প্রকাশ করি।
ঢাবির এ শিক্ষক নেতা বলেন, আমি ব্যক্তিগত ও পারিবারিকভাবে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের প্রতি অবিচল থেকে দেশ ও জাতির স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছি। বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি নীলদল থেকে প্রথমবারের মতো লেকচারার ক্যাটেগরিতে সিন্ডিকেট সদস্য নির্বাচিত হই। এরপর থেকে আমি বহুবার নীলদল থেকে মনোনীত হয়ে সিনেট, সিন্ডিকেট, ডিন, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং সভাপতি নির্বাচিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি তথা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। শিক্ষক সমিতির নেতৃত্ব দানকালে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকেছি। তথাকথিত রাজনৈতিক অপশক্তির অরাজকতা সৃষ্টির অপচেষ্টার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচিসহ জনমত গঠনে আমার ভূমিকা গণমাধ্যমে বহুল প্রচারিত হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএ