জাতীয় সংসদের ৫০ বছরপূর্তি ও সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সরকারের জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় জাতীয় সংসদ অনন্য ভূমিকা পালন করছে।’
তিনি বলেন, ‘সংসদের স্থায়ী কমিটিগুলো এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। সরকারের অধিকতর স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সংসদের স্থায়ী কমিটিগুরোর চেয়ারম্যান মন্ত্রীর পরিবর্তে সংসদ সদস্যদের নির্বাচিত করা হচ্ছে। বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের থেকে স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যানও নির্বাচিত করা হচ্ছে।’
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুক্রবার জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির স্মারক বক্তৃতার ওপর আলোচনার প্রস্তাব উপস্থাপনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
সংসদের কার্যপ্রণালি বিধির ১৪৭ এ অনুযায়ি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন। এর আগে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ সংসদে বিশেষ অধিবেশনে স্মারক বক্তৃতা দেন।
সংসদে উপস্থাপিত প্রস্তাবে বলা হয়, ‘বালাদেশ জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তির এই মাহেন্দ্রক্ষণে সংসদের অভিমত এই যে, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সংসদীয় গণতন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দুরূপে জনগণের জীবনমান উন্নয়ন একং আশা আকাঙ্খার সকল সফল বাস্তবায়নে অব্যাহতভাবে কাযকর ও সক্রিয় ভূমিকা রাখবে এবং এর মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র হবে সুসংহত, শোষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে, সকলের জন্য সাম্য ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে, সংবিধানের এ অঙ্গীকারসমূহ পূরণ আমরা সকলে একযোগে কাজ করবো, গড়ে তুলবো আগামীর সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা, এই হোক আমাদের প্রত্যয়’।
প্রস্তাব উত্থাপনের পর স্পিকারের অনুমোদন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদনেতা শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭ এপ্রিল জাতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। ১৯৭৩ সালের ৭ এপ্রিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। আমরা জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তি সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছি। এই ৫০ বছরে জাতীয় সংসদের পথ চলা মসৃণ ছিলো না। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে সংবিধানকে ক্ষত-বিক্ষত করেছে। গণতন্ত্র ও জাতীয় সংসদের ওপর আঘাত হেনেছে। সংবিধানের ৪ মূলনীতিকে আঘাত করা হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের পথ বন্ধ করার জন্য ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় সংসদে ইনডেমিনিটি অধ্যাদেশকে কালো আইনে পরিণত করা ছিলো সংসদের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। পরবর্তিতে সপ্তম জাতীয় সংসদে ইডেমিনিটি অধ্যাদেশ বাতিলের মাধ্যমে ইতিহাসের নির্মম ও নিকৃষ্টতম ১৫ আগস্টের বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার বিচারের পথ সুগম করা হয়।’
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ