শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

অর্থের বিনিময়ে জমি দখলে সহায়তা ওসির বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

দশ লাখ টাকার বিনিময়ে প্রায় দেড় কোটি টাকা মূল্যের জমি দখলে দখলদারদের সহযোগিতা করার অভিযোগে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শাহ্ মো. আওলাদ হোসেনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বরিশাল নগরীর সিঅ্যান্ডবি রোড ১ নম্বর পোল এলাকার বাসিন্দা আবু সাইদ খলিফার স্ত্রী নিলুফা বেগম বাদী হয়ে গতকাল আদালতে এ মামলা করেন। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আনোয়ারুল হক মামলা আমলে নিয়ে অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে বরিশাল আঞ্চলিক দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দিয়েছেন। ওসি আওলাদ ছাড়াও অন্য আসামিরা হলেন কোতোয়ালি থানার এসআই মামুন, কথিত দখলদার নগরীর সিঅ্যান্ডবি রোডের বাসিন্দা ডা. আনোয়ারুল্লাহ, তার স্ত্রী রহিমা বেগম, স্থানীয় বাসিন্দা মুকিব হোসেন ও জামালউদ্দীন ইউসুফ। মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) গোলাম রউফ খান, কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউর রহমান, এসআই ওহাব এবং স্থানীয় রেহানাসহ ১০ জনকে।

মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বাদী তার পিতার মৃত্যুর পর ওয়ারিশসূত্রে পাওয়া ৭ শতাংশ জমি ভোগদখল করে আসছিলেন। যার আনুমানিক মূল্য দেড় কোটি টাকা। গত এক বছর ধরে পার্শ্ববর্তী আনোয়ারুল্লাহর দৃষ্টি পড়ে ওই জমির ওপর। তাদের সেখান থেকে সরে যেতে ওসি আওলাদ প্রস্তাব দেন। কিন্তু সে প্রস্তাবে রাজি হননি তারা। এ নিয়ে গত বছর ২১ মার্চ আদালতে মামলা হলে দুই তরফা শুনানি পর্যন্ত স্থিতিবস্থা জারির নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু স্থিতিবস্থা উপেক্ষা করে আনোয়ারের ক্যাডার বাহিনী পুলিশের সহায়তায় গত ২২ জানুয়ারি রাতে ওই জমিতে থাকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট ও ভাঙচুর চালায়।

এরপর গত ২৫ জানুয়ারি ওসি আওলাদের অফিস কক্ষে দশ লাখ টাকার বিনিময়ে সম্পত্তি ছেড়ে চলে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয় বাদীকে। বাদী রাজি না হওয়ায় আসামি ওসি হুঙ্কার দিয়ে ওঠেন। দখলদারদের বলেন, দশ লাখ টাকা আমাকে (ওসি) দেন, দেখেন আমি ওসি কী করতে পারি। তার ওই বক্তব্যের অডিও রেকর্ডিং আছে বলেও এজাহারে উল্লেখ রয়েছে।

এরপর সেই দশ লাখ টাকা ওসি তার টেবিলের ড্রয়ারে রাখেন। এরপর বাদী বিষয়টি উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম রউফকে অবহিত করেন। তখন উপ-পুলিশ কমিশনার ওসি ও এসআইকে আদালতের নির্দেশের প্রতি সম্মান দেখানোর নির্দেশ দেন।

এরপরও গত ২৬ জানুয়ারি ভোরে পুলিশের সহায়তায় স্থানীয় সন্ত্রাসী মুকিব ও তার ক্যাডার বাহিনী লাঠিসোঁটা এবং ধারালো অস্ত্র নিয়ে জমি দখল করে। এ সময় তারা বাদী ও তার পরিবারের সদস্য নূপুর, তার পিতা সাইদ খলিফা ও ভাবী লিপি এবং লিপির ছেলে শারুককে পিটিয়ে-কুপিয়ে গুরুতর আহত করে।

আহত হওয়ার পরও সাদা পোশাকধারী পুলিশ তাকে আটকে রাখে। এরপর ওসির সহায়তায় ২৭ জানুয়ারি নিলুফা, তার মেয়ে নূপুরসহ ছয়জনকে আসামি করে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করে দখলদাররা। ওই মামলায় নূপুরকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

অভিযোগ অস্বীকার করে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শাহ্ মো. আওলাদ হোসেন বলেন, আনোয়ারুল্লাহর জমির কাগজপত্র শতভাগ সঠিক। ওই জমি দখল কিংবা বেদখল কোনো কাজেই তিনি (ওসি) সম্পৃক্ত নন। এ জন্য তিনি কারও কাছ থেকে উেকাচও নেননি। তাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলার আসামি করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর