শুক্রবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

ঘরে ফিরতে চায় সেই আইএস তরুণী

প্রতিদিন ডেস্ক

ব্রিটিশ-বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নারী শামীমা বেগম। তিনি ব্রিটেন থেকে পালিয়ে জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা আইএসে যোগ দিয়েছিলেন। তারপর অনেক ঘটনার জালে জড়িয়ে এখন তিনি ঘরে ফিরতে চাইছেন। সিরিয়ায় আইএস উৎখাতে আশ্রয় হারিয়ে শরণার্থী শিবিরে ঠাঁই হওয়া এই শামীমা লন্ডনে ফিরে আসতে চাইছেন। সূত্র : বিবিসি। এক সাক্ষাৎকারে শামীমা জানিয়েছেন, আইএসে যোগ দিতে সিরিয়ায় আসার জন্য অনুতাপ নেই তার। তবে অনাগত সন্তানের জন্য লন্ডনের বেথনাল অ্যান্ড গ্রিন এলাকায় পরিবারের কাছে ফিরতে চান তিনি।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে বেথনাল গ্রিন একাডেমির নবম শ্রেণির ছাত্র শামীমা ও তার সহপাঠী আরেক ব্রিটিশ-বাংলাদেশি খাদিজা সুলতানাসহ তিন তরুণী আইএসে যোগ দিতে সিরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন। এরপর আইএস জঙ্গিদের ওপর বোমা হামলায় খাদিজা নিহত হয়েছেন। শামীমা যখন যুক্তরাজ্য ছাড়েন তখন তার বয়স ছিল ১৫ বছর, আর খাদিজা ছিলেন তাদের এক বছরের বড়। বাসায় ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে গ্যাটউইক বিমানবন্দর থেকে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে আসেন তারা। সেখান থেকে সীমান্ত পেরিয়ে চলে যান সিরিয়ায়। আইএসের ‘খেলাফতের’ কথিত রাজধানী রাকায় পৌঁছে এই জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্যদের বিয়ে করতে নতুন আসা মেয়েদের সঙ্গে একটি বাড়িতে ছিলেন শামীমা। ১০ দিন পর ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম গ্রহণকারী ২৭ বছরের এক ডাচ যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। এরপর থেকে তার সঙ্গেই ছিলেন শামীমা। তবে সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে আইএসের সর্বশেষ দখলে থাকা শহর বাঘুজ থেকে দুই সপ্তাহ আগে পালায় এই দম্পতি। পরে আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইরত সিরীয় যোদ্ধাদের একটি গ্রুপের কাছে আত্মসমর্পণ করেন শামীমার স্বামী। আর এখন শামীমার আশ্রয় হয়েছে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের ক্যাম্পে, যেখানে আশ্রয় নিয়েছেন ৩৯ হাজার মানুষ।

সাংবাদিক অ্যান্থোনি লয়েডকে শামীমা বলেছেন, আইএসের খেলাফত এখন শেষের পথে। তিনি বলেন, ‘আমার আর বড়  কোনো আশা নেই। তারা শুধু ছোট থেকে ছোটই হচ্ছে। এত  বেশি দমন-পীড়ন ও দুর্নীতি চলছে যে, আমি মনে করি না, তারা জয়ী হতে পারবে।’

দুই সন্তানের মৃত্যুর কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এটা ছিল খুব কষ্টের। প্রথম সন্তান মেয়ে মারা গেছে এক বছর নয় মাস বয়সে, এক মাস আগেই বাঘুজে তাকে কবর দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় সন্তান মারা গেছে তিন মাস আগে। অপুষ্টিজনিত অসুস্থতায় আট মাসের ওই শিশুর মৃত্যু হয়। শামীমা জানান, তিনি সন্তানকে একটি হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে কোনো ওষুধ ছিল না। ছিল না পর্যাপ্ত চিকিৎসক-নার্সও। সে কারণেই এখন অনাগত সন্তানকে নিয়ে তিনি বেশি ভাবছেন। তিনি বলেন, ‘এখন আমি ঘরে ফিরে আমার সন্তানকে নিয়ে শান্তভাবে বেঁচে থাকতে যা করতে হয়, তা-ই করব।’

সর্বশেষ খবর