বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

পরিবারের তিনজনের বেশি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে থাকতে পারবেন না

নিজস্ব প্রতিবেদক

একই পরিবারের তিনজনের বেশি সদস্য কোনো ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে থাকতে পারবেন না। গতকাল এ সংক্রান্ত আইনের খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার শাখার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান।

সচিব জানান, ‘ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধনী) আইন-২০২৩’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সংশোধিত আইন অনুযায়ী একই পরিবারের তিনজনের বেশি সদস্য কোনো ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে থাকতে পারবেন না। বর্তমানে একই পরিবারের সর্বোচ্চ চারজন থাকার বিধান রয়েছে। সংশোধিত আইনে এ সংখ্যা একজন কমিয়ে আনা হয়েছে। তা ছাড়া খসড়া আইনে বলা হয়েছে, ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য বা আত্মীয় যে-ই হোক না কেন তাকে অবশ্যই জামানত বা বন্ড দিয়ে ঋণ গ্রহণ করতে হবে। এর ব্যত্যয় করা যাবে না।

ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি হওয়ার পরও কেউ যদি ঋণ পরিশোধ না করে তবে ব্যাংকিং আইনে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংককে খেলাপিদের তালিকা সম্পর্কে অবহিত করবে। এরপর তাদের ট্রেড লাইসেন্সের নিষেধাজ্ঞা, বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা, বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ও রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানির কাছে কোম্পানির নিবন্ধনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে। তবে যদি কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান তার খেলাপি ঋণগ্রহীতার তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংকে না পাঠায় সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা ও সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা জরিমানা করতে পারবে। তার পরও নির্দেশনা লঙ্ঘন অব্যাহত রাখলে বা খেলাপিদের তালিকা না পাঠালে প্রতিদিনের জন্য ১ লাখ টাকা জরিমানা আরোপ করা হবে। ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ঋণ পরিশোধ সাপেক্ষে তালিকা থেকে অব্যাহতি প্রাপ্তির পর বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত সময় পাঁচ বছর অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত কোনো ব্যাংক কোম্পানি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হওয়ার যোগ্য হবেন না। এ ছাড়া কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণগ্রহীতা হিসেবে তালিকাভুক্ত হলে বাংলাদেশ ব্যাংক তার পরিচালক পদ শূন্য ঘোষণা করতে পারবে। কোনো ব্যাংক বা কোম্পানির অর্থায়নে পরিচালিত কোনো প্রতিষ্ঠানে যেন বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়মিত তদন্ত করতে পারে সেই ধারাও সংযোজন করা হয়েছে ব্যাংক কোম্পানি আইনে। এ ছাড়া ‘ভূমি উন্নয়ন কর আইন-২০২৩’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সচিব জানান, বিদ্যমান ভূমি উন্নয়ন করের ক্ষেত্রে বাংলা বছরের ক্যালেন্ডার অনুসরণ করা হয়। কিন্তু খসড়া আইনে করের ক্ষেত্রে অর্থবছরকে (জুলাই-জুন) বিবেচনা করা হবে। এ আইন পাস হলে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে (অনলাইনে) কর দিতে হবে। ভূমির মালিক যদি টানা তিন বছর ভূমি উন্নয়ন কর না দেন তবে বছরে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ হারে জরিমানা আদায় করা হবে।

আগের মতো ২৫ বিঘা পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর মওকুফের বিধান রাখা হয়েছে খসড়া আইনে। প্রতি বছর কার কত ভূমি উন্নয়ন কর আরোপ করা হয়েছে তা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নোটিস বোর্ডে টাঙিয়ে দেবেন। বিশেষ সময় বা অনিবার্য কারণবশত এ করের হার সরকার হ্রাস করতে পারবে বলে জানান মাহমুদুল হোসাইন খান।

সর্বশেষ খবর