সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়নে দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে। এজন্য সিভিল সার্ভিস প্রফেশনালদের পেশাদারি ও সর্বস্তরে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। গতকাল রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘দক্ষিণ এশিয়ায় টেকসই উন্নয়ন : আমাদের অবস্থান’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে এসব কথা বলেন বক্তারা। ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ), সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (সানপা) এবং ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের (আইওএম) যৌথ উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী এ আয়োজন শেষ হয় গতকাল। গত শুক্রবার এ আন্তর্জাতিক কনফারেন্স শুরু হয়।
কনফারেন্সের শেষ অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ। ইউজিসি চেয়ারম্যান বক্তব্যে বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার টেকসই উন্নয়ন, এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় এবং প্রবৃদ্ধি অর্থনীতির ধীরগতি কাটিয়ে উঠতে এ সম্মেলন থেকে অর্জিত ফলাফল বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে। সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে প্রবন্ধ উপস্থাপন ও আলোচনা করেন- জাতিসংঘ হেডকোয়ার্টার্সের ডিরেক্টর ঝুয়াং ঝু, আইওএম প্রতিনিধি ফাতেমা নুজরাত গাজ্জালী, সানপা প্রেসিডেন্ট ও আলবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আখলাক হক, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান শামীম হায়দার পাটোয়ারী, ডিকেন ইউনিভার্সিটির ড. ফারা আজমাত, হামাদ বিন খলিফা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লিজলি এ পল, পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইয়ামিনা সালমান প্রমুখ।
সম্মেলনে উপস্থাপিত গবেষণাগ্রন্থ ও আলোচনায় শিক্ষাবিদরা বলেন, সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়নে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা, সিভিল সার্ভিস প্রফেশনালদের পেশাদারি ও সর্বস্তরের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।
তারা বলেন, উন্নয়ন মডেলে প্রান্তিক মানুষের অধিকারকে গুরুত্ব দিতে হবে, জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বৈশ্বিক সমস্যা মোকাবিলায় গুরুত্ব দিতে হবে। অংশীজনের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও জোরদার করতে হবে বলেও মত দেন তারা। বক্তারা বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সুশাসন নিশ্চিতে রাজনৈতিক নেতৃত্বের সুস্পষ্ট অঙ্গীকার গুরুত্বপূর্ণ। তাই সব পর্যায়ে রাজনৈতিক জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি, বেসরকারি, দাতা সংস্থাগুলোকে শিক্ষা ও গবেষণায় অর্থায়ন বাড়ানোর অনুরোধ করেন বক্তারা।
‘সড়ক নিরাপত্তা ও টেকসই পরিবহন ব্যবস্থা’ শীর্ষক ডায়ালগে গতকাল অংশ নেন নিরাপদ সড়ক চাই-এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন। বক্তব্যে তিনি বলেন, আন্দোলনের মুখে সড়ক পরিবহন আইন কাটছাঁট করে গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু সড়কে নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হয়নি সেখানে। সড়ক পরিবহন আইনে যেসব বিষয় রয়েছে সেগুলো সড়ক নিরাপত্তা জন্য যথেষ্ট নয়। পথচারীদের জন্য সড়ক পরিবহন আইনে কিছু নেই। কিন্তু এটি থাকা জরুরি। তাই আমরা এখন সড়ক নিরাপত্তা আইন চাই। কারণ সড়ক নিরাপত্তার জন্য যারা কাজ করছে তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ নেই। ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, স্কুলে স্কুলে রোড সেফটি ইউনিট গঠন করতে হবে। কারণ, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ কাজে জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু তাদের এ-সংক্রান্ত কোনো জ্ঞান বা প্রশিক্ষণ নেই। এর ফলে তারা দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনে বাংলাদেশসহ ১৫টি দেশের ৯০টি বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠান থেকে ২৫০ জন একাডেমিক ও স্কলার অংশ নেন। এ কনফারেন্সে চারটি প্লেনারি সেশন ও ১৭টি প্যারালাল সেশন অনুষ্ঠিত হয়।